WB Panchayat Election 2023

ভোটে ঘাসফুলের প্রার্থী বিরহোড় যুবক ফাকরু

জঙ্গলমহলের বাঘমুণ্ডি ব্লকের বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েতের ১৭ নম্বর আসন থেকে ভোটে লড়ছেন ফাকরু। তাঁর বাবা পুতুন শিকারি বা মা রাইমণি শিকারি, কেউই লেখাপড়া করেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ০৭:০৪
Share:

বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী ফাকরু শিকারি। ছবি: সুজিত মাহাতো

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে সম্প্রতি গ্রামের আরও কয়েক জনের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছিলেন বাঘমুণ্ডির ভূপতিপল্লির বাসিন্দা, বিরহোড় যুবক ফাকরু শিকারি। সেই ফাকরু এ বারে পঞ্চায়েত ভোটে এলাকায় তৃণমূলের প্রার্থী। জেলার বিরহোড়দের জীবন নিয়ে গবেষণা করা জলধর কর্মকার জানান, বিরহোড় সম্প্রদায়ের মধ্যে ফাকরু দ্বিতীয়, যিনি পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। এর আগে বাম আমলে প্রার্থী হয়েছিলেন এই সম্প্রদায়েরই লালমোহন শিকারি।

Advertisement

জঙ্গলমহলের বাঘমুণ্ডি ব্লকের বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েতের ১৭ নম্বর আসন থেকে ভোটে লড়ছেন ফাকরু। তাঁর বাবা পুতুন শিকারি বা মা রাইমণি শিকারি, কেউই লেখাপড়া করেননি। ফাকরু অষ্টম শ্রেণি পাশ করেছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের পূর্বপুরুষের জীবন ছিল জঙ্গল-নির্ভর। বাবা-মা তাই লেখাপড়া করতে পারেননি। নিজেরও বেশি দূর লেখাপড়া হয়নি। তবে তিন ছেলেমেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছি।”

ইতিমধ্যে এলাকায় ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছেন ফাকরু। ভোটের ময়দানে আসা কী ভাবে? পেশায় গাড়িচালক ফারুক বলেন, “দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি আমাদের সমাজের জন্য কাজ করতে বার্তা দিয়েছিলেন। পরে, তৃণমূলের তরফে ভোটে দাঁড়ানোর প্রস্তাব আসে। মনে হল, ভোটে দাঁড়িয়ে জিতলে সমাজের হয়ে কিছু কাজ করতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “জঙ্গল থেকে লোকালয়ের জীবনে এলেও কর্মসংস্থানের সুযোগ সে ভাবে নেই। চাষের জমি দেওয়া হলেও সেচের সুযোগ নেই। চাষাবাদের উন্নতি দরকার। না হলে লোকালয়ে কী ভাবে বাঁচব? ভোটে জিতলে এই সমস্যাগুলি নিয়ে বলার সুযোগ পাব।”

Advertisement

গবেষকেরা জানান, বিরহোড় সম্প্রদায় পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ‘পার্টিকুলারলি ভালনারেবল ট্রাইব্যাল গ্রুপ’ (পিজিভিটি)। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও মধ্যপ্রদেশেও এই জনজাতির সন্ধান মিলেছে। জনসংখ্যার বিচারে এই রাজ্যে বিরহোড়রাই তবে ক্ষুদ্রতম ‘পিজিভিটি’ জনগোষ্ঠী। জলধরের কথায়, “বেশ কয়েক বছর আগে এঁদের জঙ্গল থেকে লোকালয়ে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। তবে আজও তাঁরা এই জীবনযাত্রায় সে ভাবে স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠতে পারেননি।”

তৃণমূলের বাঘমুণ্ডি ব্লক সভাপতি নিকুঞ্জ মাঝি বলেন, “ওই এলাকার প্রার্থিতালিকায় আমরা বিরহোড় জনজাতির এক যুবককে রেখেছি। আমরা মনে করেছি, ওই সম্প্রদায়েরও এক জন প্রতিনিধিত্ব করুক।” লুপ্তপ্রায় জনজাতির এক জন মানুষ পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন। এটা অবশ্যই গণতন্ত্রের পক্ষে সদর্থক দিক,জানান বিডিও (বাঘমুণ্ডি) দেবরাজ ঘোষও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন