দফতরে তালা মেরে কর্মীদের মিষ্টি খাইয়ে বিক্ষোভে চাষিরা

বিদ্যুৎ পরিষেবার হাল ফেরানোর দাবিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার কৃষিজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি সাব-স্টেশনের চারটি ফিডারের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেন। আবার আন্দোলনকারীদের দফতরের কর্মীদের মিষ্টি খাইয়ে গাঁধীগিরি করতেও দেখা গেল। মঙ্গলবার সকালে ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর সাব-স্টেশনের ঘটনা। আন্দোলনের জেরে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকল ময়ূরেশ্বর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০২:২৯
Share:

গাঁধীগিরি। —নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যুৎ পরিষেবার হাল ফেরানোর দাবিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার কৃষিজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি সাব-স্টেশনের চারটি ফিডারের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেন। আবার আন্দোলনকারীদের দফতরের কর্মীদের মিষ্টি খাইয়ে গাঁধীগিরি করতেও দেখা গেল। মঙ্গলবার সকালে ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর সাব-স্টেশনের ঘটনা। আন্দোলনের জেরে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকল ময়ূরেশ্বর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। বেলা ১টার পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে ফের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Advertisement

ময়ূরেশ্বর এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবার বেহাল দশা দীর্ঘ দিনের। বিশেষত বোরো ধান চাষের মরসুমে সাব-মার্সিবল পাম্পের জন্য চাহিদা যখন তুঙ্গে ওঠে, তখন পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়। দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো-ভোল্টেজের দাপটে জনজীবন নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে বলে বাসিন্দাদের দাবি। ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার কয়েক হাজার গ্রামে ওই সাব-স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

স্টেশন সূত্রের খবর, চারটি ফিডারের মাধ্যমে এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু, মাসখানেক ধরে সনকপুর এবং ষাটপলসা ফিডারের অবস্থা চরম শোচনীয়। দু’টি ফিডারে পালা করে এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে চাষিদের অভিযোগ। ওই দু’টি ফিডারে একটি ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ট্রান্সফর্মার থেকে সর্বাধিক ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়। কিন্তু, বর্তমানে চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৪৩০ মেগাওয়াট। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই পালা করে এক ঘণ্টা করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ফিডার দু’টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় সনকপুর, ভগবতীপুর, তাউসিয়া, পাখুরিয়া প্রভৃতি এলাকার চাষিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ভগবতীপুরের সুশান্ত দে, তাউসিয়ার ত্রিদিব কুণ্ডুরা বলেন, “এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ মিলছে। ওই সময়ের মধ্যে সাব-মার্সিবল থেকে দীর্ঘ সেচ নালা পরিবাহিত হয়ে মাঠে জল পৌঁছতে না পৌঁছতেই সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আর সেচের অভাবে আমাদের জমির ধান শুকিয়ে লাল হতে বসেছে।” এ দিন তাই সাব-স্টেশনের অফিসঘর থেকে কর্মীদের বের করে তালা ঝুলিয়ে দেন চাষিরা।

Advertisement

বেলা একটার সময়ে অবশ্য সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের স্টেশন ম্যানেজার সৌম্যজিৎ ভৌমিকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ওই সাব-স্টেশনের অপারেটর তথা জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র ফণিভূষণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। চাষিদের এই ক্ষোভ স্বাভাবিক। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই সমাধান হয়ে যাবে।” বুধবারের মধ্যেই পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতির আশ্বাস দিয়েছেন সৌম্যজিৎবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন