উজাড় খেত, অসময়ে বৃষ্টিই সঙ্কট 

দু’দিনের বৃষ্টি। কিন্তু অসময়ে। উপ-কৃষি অধিকর্তা এসে দেখলেন, পাত্রসায়রের সমস্ত খেত উজাড় হয়ে গিয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০১:১০
Share:

চাষের খেত পরিদর্শন করছেন কৃষি আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র

দু’দিনের বৃষ্টি। কিন্তু অসময়ে। উপ-কৃষি অধিকর্তা এসে দেখলেন, পাত্রসায়রের সমস্ত খেত উজাড় হয়ে গিয়েছে।
সোমবার পাত্রসায়রে চাষ-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন বাঁকুড়া জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘একশো ভাগ ফসলই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাষির অবস্থা খুব করুণ। বিশেষ সাহায্যের দরকার।’’ তিনি জানান, ফসল বিমার টাকা যাতে ঠিকঠাক পাওয়া যায় সে জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অনেকেই কৃষিঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন। ঋণ শোধে যে অনেকেরই সমস্যা হবে, সেই আঁচও পাওয়া যাচ্ছে। ৠণগুলিকে দীর্ঘ মেয়াদী করার জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। বলেন, ‘‘এ ছাড়াও যদি কোনও ছাড় পাওয়া যায়, সেটাও দেখা হবে।’’
ফসল গিয়েছে। ক্ষতও দগদগে জমিতে। কৃষি দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, জমিগুলি দ্রুত শোধন করা দরকার। সুশান্তবাবু জানিয়েছেন, শুধু আলুর জমি নয়। পচা জমির জল যে সব জমিতে ঢুকেছে, সব শোধন করতে হবে। তার জন্য বিঘা পিছু দেড় কুইন্টাল করে চুন দরকার।
দফতর সূত্রেই জানা যাচ্ছে, পাত্রসায়রে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিদেন পক্ষে ৩,১৯৪ বিঘা জমি। হিসেব করে দেখলে, শোধন করতে চাই প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কুইন্টাল চুন। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে রাজ্যের সাহায্য দরকার। চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁদের দাবিদাওয়া আমরা রাজ্যে পাঠাব।’’
পাত্রসায়রের প্রধান অর্থকরী ফসল হল আলু। রাম দুয়ারি নামে এক চাষি জানাচ্ছেন, সারা বছরের অনেক খরচের জন্য এই চাষের উপরেই নির্ভর করে থাকেন তাঁরা। এই সময়টাই মাঠ থেকে ফসল ওঠার। কিন্তু হপ্তাখানেক আগের বৃষ্টিতে তীরে এসে তরীর ভরাডুবি হয়েছে। মার্চের মাঝামাঝি অনেকেই বোরো চাষ করেন। কেউ গম বোনেন। কেউ আনাজ লাগান। এখন সেটাও প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। কৃষি দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, জমিগুলির আম্লিকতা খুবই বেড়ে গিয়েছে। শোধন না করলে চাষ করা খুবই মুশকিল।
পাত্রসায়রের সহ-কৃষি অধিকর্তা রঞ্জন লোহারা বলেন, ‘‘চুন দিলে জমিগুলিকে পনেরো-কুড়ি দিন ফেলে রাখতে হবে।’’ এই পরিস্থিতিতে শোধন করার চটজলদি কোনও উপায় রয়েছে কি না, তা নিয়ে কৃষি গবেষণাকেন্দ্রগুলির সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বেলুট রসুলপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস বারি বলেন, ‘‘চাষিরা এখন বিদ্যুতের বিল মেটানোর অবস্থাতেই নেই। তাঁদের সাব মার্সিবলগুলির বিদ্যুৎ সংযোগ যাতে এখনই কেটে দেওয়া না হয়, সে জন্য আবেদন করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন