ফাইল চিত্র।
কয়েক জন অধ্যাপককে ‘আটকে’ রাখা হয়েছে জানিয়ে শান্তিনিকেতন থানায় শুক্রবার অভিযোগ জানালেন বিশ্বভারতীর পদার্থবিদ্যা বিভাগের দুই অধ্যাপক। লিখিত অভিযোগে তাঁদের দাবি, এ দিন ইংরেজি বিভাগের অন্তত ১৫ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘আটকে’ রাখা হয়। যদিও এই অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশ এবং বিশ্বভারতীর তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিশ্বভারতীর বর্তমান ‘পরিস্থিতি’ সম্পর্কে একটি স্মারকলিপি প্রস্তুত করেছিলেন অধ্যাপকদের একাংশ। সেখানে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরের পর ‘অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ওই সব সিদ্ধান্তের বিরোধিতার পাশাপাশি গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ারও অভিযোগ তোলা হয়। স্মারকলিপির বয়ান অনুযায়ী অধ্যাপকদের দাবি, “করোনা পরিস্থিতি খানিকটা স্থিতিশীল হওয়ার পর নতুন বছরের শুরুতে উপাচার্য যে দু’টি বৈঠক করেন, সেখানে নিজের ঢাক নিজে পেটানো ছিল, সহকর্মীদের প্রতি কটূবাক্য বর্ষণ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু পড়াশোনা, পড়ানো, গবেষণা বিষয়ে ন্যূনতম কোনও আলোচনা ছিল না।’’
স্মারকলিপিতে গত কয়েক দিন ধরে স্বাক্ষর সংগ্রহও করছিলেন অধ্যাপকদের একাংশ। সেই স্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি পাঠানোর কথা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সূত্রের খবর, ইংরেজি বিভাগের বেশ কয়েক জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা সহ ৩৫ জনেরও বেশি ইতিমধ্যেই সই করেছেন ওই স্মারকলিপিতে। এই স্বাক্ষরের কারণেই এ দিন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অরণি চক্রবর্তী ও পীযূষকান্তি ঘোষ তাঁদের অভিযোগপত্রে দাবি করেছেন, শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ ইংরেজির অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের বৈঠকে ডাকেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। উপস্থিত প্রতিনিধিদের কাছে উপাচার্য কিছু বিশেষ কাগজপত্র দাবি করেন। সেই কাগজপত্র না-পাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ তাঁদের আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অরণিবাবু বলেন, “দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমার সহকর্মীদের বিশ্বভারতীতে আটকে রাখা হয়েছিল। পড়ুয়ারা অধ্যাপকদের এমন ঘেরাও আগেও করেছে। কিন্তু, এখানে উপাচার্য সেই একই কাজ করছেন! ভিতরে মহিলারাও ছিলেন। কেউ কেউ অসুস্থও।’’ ‘আটকে’ থাকা প্রত্যেকেকে ‘উদ্ধারের’ জন্যই পুলিশের সহযোগিতা তাঁরা চেয়েছেন বলে অরণিবাবু জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরে দু’জন পুলিশকর্মী সাদা পোশাকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারাও কার্যালয় থেকে বেরোন। এ দিন দুপুরে ইংরেজি বিভাগে তালাও ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর। সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিরাপত্তারক্ষীদের উপস্থিতিতে সেই তালা খোলা হয়।