চাকা ফেটে রেলিংয়ে ধাক্কা বাসের। দুর্ঘটনার পরে সারেঙ্গার পিড়রগাড়ি মোড়ের কাছে উমাকান্ত ধরের তোলা ছবি।
দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় সামনের চাকা ফেটে বেসামাল হয়ে সেতুর রেলিংয়ে ধাক্কা মারল যাত্রিবাহী একটি বাস। কোনও রকমে সেতু ছাড়িয়ে রাস্তাতেই বাসটি থেমে যায়। এর ফলে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন বাসের যাত্রীরা। তবু, অল্পবিস্তর জখম হলেন জনা পাঁচেক যাত্রী।
বৃহস্পতিবার সকালে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে সারেঙ্গা থানার পিড়রগাড়ি মোড়ে, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে কংসাবতীর একটি ক্যানালের সেতুর উপরে। এই ঘটনার জেরে রাস্তায় যানজট হল। ব্যাহত হল যান চলাচল। দুর্ঘটনার জেরে এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা প্রায় ১১টা পর্যন্ত ওই রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর জেরে দুর্ঘটনাস্থলের দু’দিকে তীব্র যানজট হয়। ঘুরপথে ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারলেও বড় গাড়ি যাতায়াত করতে না পারায় চরম অসুবিধার সম্মুখীন হন বাসযাত্রীরা। পরে বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশ মেশিন নিয়ে এসে রাস্তা থেকে খানিকটা দূরে গাড়িটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। এরপর ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ফুলকুসমা থেকে বাঁকুড়া হয়ে তারকেশ্বর রুটের ওই বেসরকারি বাসটি এ দিন সকালে রাইপুরের দিক থেকে আসছিল। বাসে প্রায় ৫০ জন যাত্রী ছিলেন। প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ পিড়রগাড়ি মোড়ের কাছে কংসাবতীর ক্যানালের উপর সেতুতে বাসটির সামনের দু’টি চাকা ফেটে যায়। চালক নিয়ন্ত্রণ হারাতেই বাসটি সেতুর রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে অন্যপাড়ে গিয়ে থামে।
দুর্ঘটনার পরেই বাস থেকে নেমে চালক ও খালাসি পালিয়ে যান। এরপর আতঙ্কিত যাত্রীরা বাস থেকে নেমে পড়েন। কয়েকজন হাতে, পায়ে চোট পান। তবে কারও আঘাতই গুরুতর নয়। খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ও পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের পিড়রগাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। বাসের যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন সারেঙ্গার চিলতোড় গ্রামের বাসিন্দা অনিমা মিশ্র, গীতা মহাপাত্র, ফুলকুসমার যশোদা মণ্ডল। অনিমাদেবীর কথায়, “কাকিমার সঙ্গে তালড্যাংরা যাচ্ছিলাম। চালক প্রচণ্ড জোরে বাস চালাচ্ছিলেন। পিড়রগাড়ি মোড়ে ঢোকার কিছুটা আগে ক্যানালের সেতুতে হঠাৎ বিরাট শব্দ হয়। তারপর দেখি বাসটি সামনের দিকে কিছুটা হেলে গেল। মুখে সামান্য আঘাত লেগেছে। কপাল জোরে সবাই বাঁচলাম।” যশোদা মণ্ডলের দাবি, “চালক জোরে গাড়ি চালানোয় এই বিপত্তি। বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে আমরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি।”