আদালতের নির্দেশে উঠল চার দশকের মাছ বাজার

আদালতের নির্দেশ পুরসভা পেয়ে গিয়েছিল আগেই। কিন্তু, বাজার থেকে উচ্ছেদের সেই নির্দেশের কথা কর্তৃপক্ষ জানালেন ২৪ ঘণ্টা আগে। তা নিয়ে সাময়িক উত্তেজনা হলেও শেষপর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসনের উপস্থিতিতে পুরসভা নিয়ন্ত্রিত প্রাচীন মাছ বাজারের দখল ফিরে পেলেন তার প্রকৃত মালিক। শনিবার সকালে সাইথিয়া শহরের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০১:০১
Share:

বাজার থেকে নিজেদের সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: অনির্বাণ সেন। (ইনসেটে) ভেঙে ফেলা হচ্ছে বাজারের ঘরগুলি।

আদালতের নির্দেশ পুরসভা পেয়ে গিয়েছিল আগেই। কিন্তু, বাজার থেকে উচ্ছেদের সেই নির্দেশের কথা কর্তৃপক্ষ জানালেন ২৪ ঘণ্টা আগে। তা নিয়ে সাময়িক উত্তেজনা হলেও শেষপর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসনের উপস্থিতিতে পুরসভা নিয়ন্ত্রিত প্রাচীন মাছ বাজারের দখল ফিরে পেলেন তার প্রকৃত মালিক। শনিবার সকালে সাইথিয়া শহরের ঘটনা।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৯৭৫ সালে সাইথিয়ার তৎকালীন নোটিফায়েড বোর্ড স্থানীয় এক দত্ত পরিবারের থেকে জমিটি ভাড়া নেয়। তার পরে সেখানেই মাছের পাইকারি বাজার ও মাংস বিক্রির দোকান করে ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়। ব্যবসা না জমায় কিছু দিনের মধ্যে মাংস বিক্রেতারা ব্যবসা গুটিয়ে চলে যান। কিন্তু মাছ বাজার বেশ জমে ওঠে। কিন্তু, ১৯৮৯ সালে বামফ্রন্ট পরিচালিত সাঁইথিয়া নোটিফায়েড বোর্ডের সঙ্গে মত বিরোধ শুরু হয় জমি মালিকদের। জমি অধিগ্রহণের পদক্ষেপ শুরু করে বোর্ডও। তার পরেই জমি ফেরত পেরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মালিক পক্ষ। হাইকোর্ট জমি অধিগ্রহণে স্থগিতাদেশ দেয়। মালিকদের পক্ষে কার্তিক দত্ত এ দিন বলেন, ‘‘সেই থেকে বিগত ২৮ বছর ধরে মামলা চলছিল। গত ১২ এপ্রিল আমরা জিতি। আদালত প্রশাসনকে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন আমরা প্রাপ্য জমি ফিরে পেয়েছি।’’

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ পুলিশ, প্রশাসন ও পুর কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে মাছ ব্যবসায়ীদের ওই বাজার থেকে উচ্ছেদ করার কাজ শুরু হয়। মাথায় বাজ পড়ে রুটি রোজগারের আস্তানা হারানো ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীরা প্রাথমিক ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। সামান্য উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে সবার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দেন, কয়েক দিনের মধ্যেই পুর কর্তৃপক্ষ মাছের পাইকারি বাজারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দেবে। মাছ ব্যবসায়ীরা প্রশাসন ও পুর কর্তৃপক্ষের কথামতো তাঁদের মালপত্র সরিয়ে নেন।

Advertisement

পরে মাছের আড়তদার সমীর দাস, কাজল ধীবর, মহম্মদ হাসিনরা বলেন, ‘‘বাপ-কাকাদের আমল থেকে আমরা এখানে ব্যবসা করে আসছি। একেবারে মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা। এখন কী যে হবে কিছু বুঝতে পারছি না।’’ এ দিন ঘটনাস্থলে সাঁইথিয়ার বিডিও অতনু ঝুরি, ওসি সুজয় টুঙ্গা, এবং পরে ডিএসপি হেড কোয়ার্টার প্রদীপ কুমার পৌঁছেছিলেন। বিডিও বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতো আমাদের উপস্থিতিতে সাঁইথিয়া পুর কর্তৃপক্ষ কার্তিকবাবুদের জমি হস্তান্তর করে দিয়েছেন।’’ নতুন মাছ বাজার প্রসঙ্গে বিপ্লববাবু এ দিন জানান, সাঁইথিয়া ইউনিয়ন বোর্ড মোড়ে মেন রাস্তা লাগোয়া বিকল্প মাছ বাজারের জমি দেখা হয়েছে। মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে খুব শীঘ্র সেখানে বাজার গড়ে তোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন