পুলিশ সেজে প্রৌঢ়ার সোনার হার লোপাট

বোলপুরের অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির মহামায়া রায় তা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৭
Share:

মহামায়াদেবীর হাতে এই কাগজেই ছিল নুড়ি। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ সেজে প্রৌঢ়ার সোনার হার লোপাটের অভিযোগ উঠল বোলপুরে। রবিবার সাতসকালে এমনই কাণ্ড ঘটেছে শহরের পুরনো দমকল অফিসের কাছে, বোলপুর-জয়দেব সড়কে।

Advertisement

বোলপুরের অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির মহামায়া রায় তা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়। তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হদিস মেলেনি ওই প্রতারকের।

কী হয়েছিল সে দিন?

Advertisement

মহামায়াদেবী জানান, রোজ সকালে বাড়ির কাছে মন্দিরে পুজো দিতে যান তিনি। রবিবারও তা-ই গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘সকাল তখন ৮টা হবে। বাড়ি ফিরছিলাম। হছাৎ আমার সামনে এসে দাঁড়াল একটা লোক। বড়সড় চেহারা। কালো সাফারি, কালো প্যান্ট আর মাথায় কালো টুপি।’’ হতচকিয়ে যান মহামায়াদেবী। তাঁর অভিযোগ, গম্ভীর গলায় নিজেকে পুলিশকর্মী হিসেবে পরিচয় দেয় ওই আগন্তুক। তার পর তাঁকে বলে, ‘‘আপনি জানেন না চার পাশে রাস্তাঘাটে কত চুরি, ছিনতাই হচ্ছে। তা-ও গলায় মোটা সোনার চেন পরে রাস্তায় বেরিয়েছেন?’’ থমমত হয়ে যান মহামায়াদেবী। কী বলবেন বুঝতে পারছিলেন না। পুলিশ এ ভাবে তাঁকে সতর্ক করছে ভেবে শেষ বলেন, ‘‘ভুল হয়েছে গিয়েছে। আর কখনও এমন করবো না।’’

মহামায়াদেবীর অভিযোগ, ওই সময় সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন শ্রমিক গোছের এক ব্যক্তি। তাঁর হাতে একটি সোনালি আংটি ছিল। একই কথা বলে ওই শ্রমিকের আঙুলের আংটি খুলে একটি কাগজের মোড়কে ভরে ফেরত দেয় ওই আগন্তুক। তার পর ওই প্রৌঢ়াকে সোনার হার খুলে দিতে বলে। মহামায়াদেবী বলেন, ‘‘প্রায় দেড় ভরির সোনার হারটা হাতে নেওয়ার পরে পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে। ওই কাগজ মুড়ে আমার হাতে থাকা পুজোর ফুলের প্যাকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলে।’’

বাড়ির পথে কিছুটা এগিয়েই সন্দেহ হয় মহামায়াদেবীর। তিনি জানান, প্যাকেট থেকে কাগজের মোড়ক বের করে খুললেই হতাবাক হয়ে যান তিনি। সোনার চেনের বদলে তাতে ছিল একটি নুড়ি পাথর। ফের পুরনো দমকলকেন্দ্রের সামনে যান মহামায়াদেবী। কিন্তু ততক্ষণে উধাও হয়েছে ওই আগন্তুক। রাস্তাতেই কানানয় ভেঙে পড়েন তিনি। ভিড় জমে লোকজনের। পরে এ নিয়ে বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মহামায়াদেবী। উল্লেখ্য, অরবন্দিপল্লিতে অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী স্বামীর সঙ্গে থাকেন মহামায়াদেবী। তাঁদের ছেলে কলকাতায় কর্মরত।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সহজে যাতে কেউ মুখ দেখতে না পায় সে জন্যেই টুপি পরেছিল ওই প্রতারক। পুলিশ সাজার জন্য পরেছিল কালো সাফারি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন