মান্ডির কাছে বহুতলে হবে অফিস

তারপর ঝালদা অচ্ছ্রুরাম স্মৃতি কলেজ চত্বরে মহকুমাশাসকের অস্থায়ী অফিস চালু হয়েছে। কিন্তু একটি মহকুমায় আরও অনেক দফতর থাকে। এ বার সেই সব তৈরিতে নামছে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০১:২৬
Share:

ঝালদাকে পূর্ণাঙ্গ মহকুমা শহর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করল প্রশাসন।

Advertisement

গত ৬ এপ্রিল পুরুলিয়া ১ ব্লকের বেলকুঁড়ি ময়দানের প্রশাসনিক সভা থেকে ঝালদা ও মানবাজার মহকুমার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর ঝালদা অচ্ছ্রুরাম স্মৃতি কলেজ চত্বরে মহকুমাশাসকের অস্থায়ী অফিস চালু হয়েছে। কিন্তু একটি মহকুমায় আরও অনেক দফতর থাকে। এ বার সেই সব তৈরিতে নামছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, পূর্ণাঙ্গ মহকুমা শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ঝালদায় ট্রেজারি, মহকুমাশাসকের এজলাস, পরিবহণ দফতর, আদালত, সংশোধনাগার, সহকারী মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর, খাদ্য দফতর, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর, পূর্ত দফতর, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর, সরকারি অতিথি নিবাস, সরকারি কর্মীদের আবাসন-সহ মোট ৩৪টি দফতরের কার্যালয়ের পরিকাঠামো গড়তে হবে। বর্তমানে কেবলমাত্র মহকুমাশাসক ও মহকুমা পুলিশ সুপারের অস্থায়ী কার্যালয় ও দমকল বিভাগই রয়েছে।

Advertisement

কাজের সুবিধার্থে এই দফতরগুলি যাতে কাছাকাছি থাকে, সে জন্য ঝালদার কিসান মান্ডির কাছে প্রায় ১০ একর জমি প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানেই মহকুমা আদালত-সহ সমস্ত প্রশাসনিক ভবন গড়ে তোলার ভাবনা রয়েছে। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ওই জমি ঘেরার জন্য পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। পূর্ত দফতরকে আদালত-সহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের নির্মাণ সংক্রান্ত নকশা তৈরি করতে বলা হয়েছে। পূর্ত দফতর তা জমা দিলেই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’ অর্থের জোগানের কোনও সমস্যা হবে না বলেই মত জেলাশাসকের।

মহকুমাশাসক (ঝালদা) সন্দীপ টুডু বলেন, ‘‘মহকুমায় যে দফতরগুলি থাকবে, সেই দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক করে তাঁদের কত জায়গার প্রয়োজন, কত কর্মী কাজ করবেন, সে সব জানতে চাওয়া হবে। তাতে একটা আন্দাজ পাওয়ার পরেই পূর্ত দফতরের সঙ্গে বসে এখানে একটি বহুতলে কতগুলি অফিস করা যেতে পারে, তা ঠিক করা হবে।’’ তিনি জানান, এ ছাড়া নির্বাচন দফতরের কাজকর্মের গুদাম, ত্রাণ সামগ্রী মজুতের গুদাম, সরকারি প্রেক্ষাগৃহও গড়ে উঠবে ঝালদায়।

সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা ঝালদা শহরের মধ্যে জমি পেলে সেখানেই প্রেক্ষাগৃহ গড়তে চান। জমি না পাওয়া গেলে তখন প্রশাসনিক দফতরগুলির কাছেই প্রেক্ষাগৃহ গড়ে তোলা যেতে পারে। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে মুক্তমঞ্চ ও ফাঁকা জমিও রাখতে চাইছেন তাঁরা। প্রয়োজনে ওই জমিতে মেলা ও প্রদর্শনী করা যেতে পারে।

সরকারি কর্মীদের আবাসনের জন্য মহকুমাশাসকের প্রস্তাবিত অফিস কিংবা ঝালদা রেল স্টেশনের কাছে থাকা একটি খাস জমির কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

ঝালদা পূর্ণাঙ্গ মহকুমা শহর হিসেবে গড়ে উঠলে পানীয় জলের সমস্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে মানছেন প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ। বর্তমানে মুরগুমা জলাধারের জল এনে এই পুরশহরকে পান করানো হয়। কিন্তু শুধু মুরগুমার ভরসায় ভবিষ্যতের ঝালদার তৃষ্ণা মিটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ ওই প্রকল্প মাঝে মধ্যেই অচল হয়ে নির্জলা হয়ে পড়ে গোটা শহর। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘তুলিনের পাশ দিয়ে হয়ে যাওয়া সুবর্ণরেখা নদী থেকে ঝালদায় জল নিয়ে আসার পথ খোলা রয়েছে। এটা ভাবা যেতে পারে।’’

পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দ্রুত ঝালদাকে পূর্ণাঙ্গ মহকুমা শহর হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমরা সেই চেষ্টা করছি। আগামী দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে পরিকাঠামো অনেকটাই গড়ে উঠবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন