মেলেনি টাকা, থমকে গিয়েছে সরকারি প্রকল্প

কাজের প্রাপ্য টাকা বকেয়া। ১০০ দিনের কাজে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন জব কার্ডধারীরা। থমকে প্রকল্প। সিউড়ির নগরীর ঘটনা! ত্রিশ দিন পেরিয়ে গেলেই আরও একটি অর্থ বর্ষ শেষ হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

কাজের প্রাপ্য টাকা বকেয়া। ১০০ দিনের কাজে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন জব কার্ডধারীরা। থমকে প্রকল্প। সিউড়ির নগরীর ঘটনা!

Advertisement

ত্রিশ দিন পেরিয়ে গেলেই আরও একটি অর্থ বর্ষ শেষ হবে। কিন্তু গোটা পঞায়েত এলাকার জবকার্ডধারীদের একটা বিশাল টাকা বকেয়া থাকায় থমকে গিয়েছে ১০০দিনের কাজ। পাছে কাজ করিয়ে জবকার্ডধারীদের রোষে পড়তে হয়, তাই পঞ্চায়েত কোনও নতুন কাজে হাত দিতেই সাহস করছে না।

পঞায়েত সূত্রেই খবর, গোটা পঞায়েত এলাকায় মোট ৪০ হাজার ৬২৮ কর্ম দিবস কাজ হয়েছে। কিন্তু গত অর্থ বর্ষে এবং বর্তমান অর্থে বর্ষ মিলিয়ে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ বকেয়া প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা। প্রধান বনলতা মাল, উপ প্রধান সুজিত মণ্ডলরা বলছেন, ‘‘কী করব, গত এপ্রিলের পর থেকে ওই খাতে কোনও টাকাই মেলেনি। সমস্যা সেই কারণে।’’

Advertisement

ওই পঞ্চায়েতের বাতাসপুর গ্রামের শেখ লালন, লতাবুনি গ্রামের লক্ষ্মীরাম সরেন বা নগরী গ্রামের গুরুদাস মালেরা বলছেন, কী হবে কাজ করে! লালনের কথায়, ‘‘গত ফেব্রুয়ারিতে পুকুর সংস্কার ও কূশকর্ণিকা নদীর পাড়ে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ দেওয়ার কাজ মিলিয়ে মোট মোট ১২দিন কাজ করেছিলাম, টাকা পাইনি।’’ লক্ষ্মীরামের একই দাবি, ‘‘একবছর আগে ১৫ দিন ধরে পুকুর কাটার কাজ করে আজও টাকা পাইনি।’’ নগরী কাঁটাবুনি গ্রামের জলপা সরেন বলছেন, ‘‘আমিই গ্রামে পুকুর কাটার সময় লোকজনকে কাজে লাগালাম। গ্রামের মানুষ টাকা পাননি বলে আমাকে সকাল সন্ধ্যা এত গালাগালি করছেন যে আমাকে বাড়ি ছেড়ে বাইরে কাটাতে হচ্ছে। পঞ্চায়েত যাচ্ছি কোনও সুরাহা হচ্ছে না।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, টাকা পাওয়ার সিস্টেমের জটিলতার কারণেই এখনও টাকা বাকেয়া। আগে রাজ্যে হয়ে ১০০ দিনের কাজের টাকা আসত। এখন সরাসরি কেন্দ্র টাকা পাঠায়। টাকা ট্রার্ন্সফার করে নিজেদের পঞ্চায়েতে টাকা ঢোকানো নির্ভর করে পঞ্চায়ের সচিব এবং প্রধানদের উপর। কিন্তু কখন কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে সেই খবর আগাম রাখতে হয় পঞ্চায়েতগুলিকে। টাকা বরাদ্দ হলেই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত সেই সময় অনলাইনে লগইন করে ফাণ্ড ট্রান্সফার করে নিজেদের পঞ্চায়েতের অনুকুলে টাকা ঢুকিয়ে নেয়। জেলার পঞ্চায়েত সচিব এবং প্রধানদের কথায় কখন কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে, এটা অনেকটা মাছ ভর্তি পুকুরে ছিপ ফেলার সুযোগের দেওয়ার মতো। নগরী পঞ্চায়েত সেই সুযোগ নিতে পারেনি। স্বীকার করছে পঞ্চায়েত।

ঘটনা হল, কাজ না হলে উন্নয়নও থমকে থাকবে। নগরী পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধান তা মানছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, জুলাই মাসের পরে আর একটি কাজও হয়নি। এই অর্থবর্ষে ২৪দিন কাজ হয়েছে। কিন্তু আগের টাকা দিয়ে আর কাজ করানো যাচ্ছে না।

উদ্বিগ্ন সিউড়ি ১ ব্লকের বিডিও মহম্মদ বদরুদ্দোজা। তিনি বলছেন, ‘‘১০০ দিনের কাজ করার নির্দেশ দিলেও ওই পঞ্চায়েতে কাজ করাতে পারছে না। সমস্যা কী ভাবে মেটে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন