গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের আঁচ ছড়াচ্ছে নানুরের গ্রামে

ফের শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে তেতে উঠল বোলপুর থানার সিঙ্গি এলাকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বোমাবাজি হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০১:৫৫
Share:

ফের শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে তেতে উঠল বোলপুর থানার সিঙ্গি এলাকা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বোমাবাজি হয়। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর নেই। এলাকায় উত্তেজনা থাকায়, পুলিশ টহলদারি বাড়িয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। সোমবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, স্মারকলিপি দেওয়ার নামে, সোমবার দুপুর বারোটা নাগাদ কিছু বহিরাগত এসে এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি করে। স্থানীয়দের দাবি, বহিরাগতরা এলাকায় গদাধর হাজরার অনুগামী বলেই পরিচিত। ঘটনার বিষয় চাউর হতেই, এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে দোকান পাট বন্ধ করে দেন। বিরোধী কাজল গোষ্ঠীর লোকজনের প্রতিরোধের মুখে পড়ে, বহিরাগতরা অবশ্য পিছু হটে। তবে, যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় বোমাবাজি এবং এলাকা দখলের লড়াই। খবর পেয়ে, বোলপুর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

এ দিন সিঙ্গির রাস্তায় জায়াগায় জায়গায় উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজির চিহ্ন স্পষ্ট। স্থানীয়দের মধ্যে চাপা আতঙ্ক। রাস্তা প্রায় ফাঁকাই। ঘটনার পর আর দোকানপাট খোলেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর ব্লকের সিঙ্গি পঞ্চায়েত ১৯ আসনের। ওই ১৯ আসনের মধ্যে তৃণমূলের প্রতীকে ৫ জন জিতেছিলেন (বিধায়ক গদাধর হাজরা গোষ্ঠীর) এবং নির্দল ১৪ জন জিতেছিলেন ( কাজল শেখ গোষ্ঠীর)। সর্বসম্মতি ক্রমে দলীয় প্রতীকে জেতা নাহিনার সদস্য এনামুল হককে প্রধান এবং নির্দল থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করে জেতা বেজরার তপসিলি মহিলা সদস্য বাহামনি বাসকিকে উপ-প্রধান করে বোর্ড গঠন হয়।

অভিযোগ, সেই সময় থেকে কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতীরা চাইছিলেন ওই পঞ্চায়েতে দখল নিয়ে এলাকায় নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে, পঞ্চায়েতের উন্নয়ন স্তব্ধ করবে। প্রধান এনামুল হক বলেন, “বোলপুরের মহকুমা শাসকের দফতরে বৈঠকের জন্যও গিয়েছিলাম। আমি জানি না, কারা কি উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি কর্মসূচী দিতে এসেছিল। আমার যত টুকু জানা, স্মারকলিপির কোনও কর্মসূচীর বিষয় আগে থেকে জানাতে হয়। কিন্তু সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত আমরা কিছুই জানি না। তার পর খবর পেলাম, কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতী এলাকায় বোমাবাজি করছে। বিষয়টি পুলিশ কে জানিয়েছি।” তাঁর দাবি, পুলিশের তৎপরতায় কোনও অঘটন ঘটেনি। এবং যারা এসেছিল তাঁরা দুষ্কৃতী। তৃণমূলের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। কারা এসেছিল, কেন এসেছিল পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।

ঘটনা হল, নানুর বিধানসভার নানুর থানা ছাড়া লাগোয়া বোলপুর এবং পাড়ুই থানার একাধিক পঞ্চায়েতে কর্তৃত্ব ছিল কাজল শেখের। জেলার রাজনৈতিক মহলের দাবি, বেশ কিছু ঘটনার জেরে, কাজল শেখ গোষ্ঠী ওই সমস্ত পঞ্চায়েতে জন সমর্থন হারাচ্ছে। স্বাভাবিক কারণে, বিরোধী নানুরের তৃণমূল বিধায়ক গদাধর হাজরার গোষ্ঠী ওই এলাকাগুলি ফের দখলের চেষ্টা করছে। আর তাতেই বাধছে গণ্ডগোল। এ দিন বহু চেষ্টা করেও কাজল শেখ এবং বিধায়ক গদাধর হাজরার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন