দিব্যেন্দু চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হল বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার দেহ। শুক্রবার বিষ্ণুপুর শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাপড় মোড়ের দারুকা কমপ্লেক্সের ঘটনা। এ দিন সন্ধ্যায় ওই ছাত্রের বাবা কলেজের এক শিক্ষক ও কিছু সিনিয়র ছাত্রীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দিব্যেন্দু চক্রবর্তী (১৯) বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজে ইংরেজি অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। দারুকা কমপ্লেক্সের বাসিন্দা, পেশায় গৃহশিক্ষক রতনচন্দ্র চক্রবর্তী ও ঝাঁটবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা ঘোষের দুই ছেলে। দিব্যেন্দু ছোট। পরিজনেরা জানান, বিষ্ণুপুর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বাঁকুড়ার কলেজে ভর্তি হন। বিষ্ণুপুর থেকে যাতায়াত করতেন।
রতনবাবুর দাবি, কলেজের দেওয়াল পত্রিকায় দেওয়ার জন্য লেখালেখি নিয়ে কিছু দিন মজে ছিলেন দিব্যেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি ওই নিয়ে কিছু একটা সমস্যা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত ঘরেই পড়াশোনা করেছিল। তার পরে কলেজের এক শিক্ষকের সঙ্গে মেসেজে কথা হয়। ছেলেটা গুম মেরে যায়।’’ রাত ১২টা নাগাদ সবাই খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়েন। সকালে উঠে হাঁটতে বেরনোর সময়ে রতনবাবুর চোখে পড়ে, ছেলের ঘরের দরজা খোলা। পাখা থেকে ঝুলছে দেহ। দিব্যেন্দুর ফোনটি লক করা ছিল। সেটি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রতনবাবু।
বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের অধ্যক্ষ ফটিকবরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি যা শুনেছি, দেওয়াল পত্রিকার জন্য ওই ছাত্রের লেখা বাতিল হয়েছিল। কিন্তু তার সঙ্গে ওই শিক্ষকের কোনও যোগ নেই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়ে তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, দিব্যেন্দু আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। পড়শি প্রবীরকুমার পাল, রঘুনন্দন দোকানিয়া, শিক্ষক শৈবাল সেনগুপ্তরা বলেন, ‘‘ভদ্র, নম্র স্বভাবের ছেলে ছিল। পড়াশোনা ছাড়া কিছুতেই থাকত না। কী যে হল, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’’