পান: গরমে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন ফল বিক্রেতা। নিজস্ব চিত্র
দিন কে দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। সঙ্গে দাবদাহ। শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে।
পারদ এমন ঊর্ধ্বমুখী যে, দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বোলপুরের রাস্তাঘাট। রাস্তাঘাট, বাসস্টপ, রাস্তার মোড় হোক আর ব্যাঙ্ক, ডাকঘর— সর্বত্রই এক অবস্থা। এ দিন সকাল থেকেই কাঠফাটা রোদের সঙ্গে ছিল চূড়ান্ত গরম। হাঁসফাঁস অবস্থা আট থেকে আশি সকলের। রাস্তায় বেরোনো পথ চলতি মানুষ থেকে সাইকেল আরোহী বা মোটরবাইক চালক— সকলেকেই চোখ, মুখ ঢেকে বাইরে বেরোতে দেখা গিয়েছে। কেউ মাথায় গামছা চাপিয়েও বেরিয়ে পড়েছেন। টুপি, রোদ চশমা তো রয়েছেই। দোকান, বাজারও সেই অর্থে বন্ধ ছিল এ দিন। খুব প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে বের হতে দেখা যায়নি।
সমুদ্র থেকে ঝোড়ো হাওয়া বন্ধ হতেই ফের তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হয়েছে রাঢ়বাংলা। তাপমাত্রা যে চড়ছে, তা বোঝা গিয়েছিল সোমবারেই। আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, সোমবার শ্রীনিকেতনে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যথাক্রমে ৩৬ ডিগ্রি এবং ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই ভাবে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ছিল যথাক্রমে ৪০ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৭ ডিগ্রি। সেটাই এখন চল্লিশের উপরে চলে গিয়েছে। দিন কে দিন পারদ এমন ঊর্ধ্বগামী দেখে, সকলেই চাইছেন ঝড়-বৃষ্টি। কিন্তু রাত পর্যন্ত অবশ্য তেমন কোনও আশার আলো দেখাতে পারেনি আবহাওয়া দফতর।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ওড়িশার বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহ চলছে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি। বঙ্গোপসাগর থেকে তীব্র ঝোড়ো বাতাস পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়ায় তা ওই গরম বাতাসকে দক্ষিণবঙ্গে আসতে দিচ্ছিল না। এ দিন ঝোড়ো বাতাস বন্ধ হতেই ওড়িশা থেকে গরম বাতাস ঢুকেছে রাঢ়বাংলায়।
গরমে টান পড়েছে রুজি, রুটিতেও। রিকশা থেকে টোটো চালক, সকলেই জানাচ্ছেন আয় একধাক্কায় কমে গিয়েছে। রিকশা চালক স্বপন দাস, টোটো চালক গোপাল হাজরা বলছেন, ‘‘এই গরমে কে আর বেরোবে! সকালের দিকে যেটুকু আয় হচ্ছে!’’ শান্তিনিকেতনের জগদীশ মাহাতো মনে করছেন, ‘‘এমন সময়ে কালবৈশাখী হলেও কিছুটা স্বস্তি দিত। কিন্তু তারও দেখা নেই।’’
যার নিট ফল, এগারোটার পর থেকে বিকেল প্রায় পাঁচটা পর্যন্ত, অঘোষিত বন্ধের চেহেরা!