মোড়ে মোড়ে বসেছে এই সব কুঁজো। বোলপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
গত ৭২ ঘণ্টায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামেনি তাপমাত্রা। পূর্বাভাস বলছে, আগামী ছ’দিন জেলায় তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা ৪৩-৪৪ ডিগ্রির মধ্যে। সঙ্গে প্রবল তাপপ্রবাহও। শুক্রবারই পারদ চড়েছে ৪৩.৯ ডিগ্রি!
ফলে এই দাবদাহ থেকে কবে মুক্তি মিলবে, এখনই তার উত্তর দিতে পারছেন না আবহবিদেরা। তবে, পথচলতি সাধারণ মানুষকে সাময়িক স্বস্তি দিতে এগিয়ে এল জেলা পুলিশ। বোলপুর শহরের মোড়ে মোড়ে রাখা হয়েছে মাটির কুঁজো। কোথাও আবার জলের সঙ্গে থাকছে গ্লুকোজ ও সরবতের ব্যবস্থাও। পাশাপাশি শহরের ব্যস্ততম মোড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরও বিশেষ ছাতা বিলির ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ওই উদ্যোগে পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছে শহরের একাধিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন এবং টোটো চালক ও মালিকদের সংগঠনও। প্রচণ্ড দাবদাহে জলকষ্ট মেটাতে এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন বোলপুরের মানুষ।
ঘটনা হল, চলতি গ্রীষ্মে হু হু করে বাড়ছে পারদ। এই দাবদাহে সকাল ১০টার পরে কার্যত ঘরের বাইরে বের হওয়া দায় হয়েছে লালমাটির দেশে। সারা বছর বোলপুর-শান্তিনিকেতনে দেশিবিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকলেও এ ক’দিন সেই সংখ্যাও কমেছে। জরুরি প্রয়োজনে শহরে নানা কাজে আসা মানুষ এবং পথাচারীদের পানীয় জলের জন্য প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে। এই পরিবেশে ঠান্ডা জলের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ। শান্তিনিকেতন এবং বোলপুর থানার সহযোগিতায় শহরের ব্যস্ততম স্থান এবং মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা কর্মীদের পাশাপাশি পথচারীদের জন্যও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫০ কেজি গ্লুকোজ স্থানীয় টোটো চালকদের সংগঠনকে দিয়েছে জেলা পুলিশ। কোথাও লালসালু আবার কোথাও কাপড়ে জড়ানো ভেজা বালির উপর ওই সকল মাটির কুঁজোয় জল ভরা থাকছে। প্রয়োজন মতো স্থানীয়দের সহায়তায় পথচারী থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে থাকা পুলিশ কর্মীরা ব্যবহার করছেন ওই পানীয় জল।
শহরের টোটো চালক ও মালিক সংগঠনের সভাপতি গোপাল হাজরা জানিয়েছেন, পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে বোলপুরের একাধিক মোড়ে, ব্যস্ততম এলাকায় এবং বাসস্টপ ও বাসস্ট্যান্ডে ওই ব্যবস্থা করা হয়েছে। বোলপুরের জামবুনি বাসস্ট্যান্ডে ঢোকা এবং বেরনোর মুখে, চিত্রামোড়ে, চৌরাস্তা, রবীন্দ্রবীথি বাইপাস ট্যুরিস্টলজ মোড়ে এবং সামনের টোটো স্ট্যান্ডেও একই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তা ছাড়াও এই শহরে ঢোকা এবং বেরনোর পথে শ্যামবাটি, ত্রিশূলাপট্টি, কাছারিপট্টি এলাকাতেও থাকছে ওই ব্যবস্থা। ওই সমস্ত এলাকায় পুলিশ কর্মীরা ঘুরে ঘুরে পথচারীদের গ্লুকোজ জল দিচ্ছেন। এ দিকে, জাতীয় সড়ক ২বি রাস্তায় শ্রীনিকেতন ট্রাফিক মোড়ে স্থায়ী পানীয় জলের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছে পুলিশ।