কে দেবে কানে শোনার যন্ত্র,বিপাকে পড়ুয়া

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ছোট থেকেই যন্ত্র ছাড়া ভাল ভাবে শুনতে পায় না। বছর তিনেক আগে স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় পড়ে গিয়ে এক বার ভেঙেছিল কানে শোনার যন্ত্র। কেঁদে ভাসিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রটি। কারণ সেই যন্ত্র কিনে দেওয়ার মতো আর্থিক সংগতি ছিল না পরিবারের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৭:০০
Share:

গোপাল দাস। নিজস্ব চিত্র

সামনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই সময়ে বিকল হয়ে গিয়েছে কানে শোনার যন্ত্র।
তাতে বিপাকে পড়েছে ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া হাইস্কুলের ছাত্র গোপাল দাস।

Advertisement

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ছোট থেকেই যন্ত্র ছাড়া ভাল ভাবে শুনতে পায় না। বছর তিনেক আগে স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় পড়ে গিয়ে এক বার ভেঙেছিল কানে শোনার যন্ত্র। কেঁদে ভাসিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রটি। কারণ সেই যন্ত্র কিনে দেওয়ার মতো আর্থিক সংগতি ছিল না পরিবারের। মেলেনি সরকারি সহায়তাও। সেই কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠায় সে। তার আগেই অবশ্য সংবাদমাধ্যমে সে কথা জানতে পেরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সিউড়ি লালদিঘি পাড়ার বাসিন্দা, শিক্ষিকা স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোপালের বাবা চন্দন দাসের হাতে যন্ত্র কেনার জন্য তুলে দেন ১০ হাজার টাকা। সেই যন্ত্র ব্যবহার করেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ভাল ভাবেই পড়াশোনা করতে পেরেছে সে।

কিন্তু, মাস দু’য়েক আগে তার কানে শোনার যন্ত্রটি পুরোপুরি বিকল হয়ে গিয়েছে। মাস দেড়েক আগে ময়ূরেশ্বর অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে আবেদন করেও যন্ত্র মেলেনি। শেষমেষ গোপাল চিঠি পাঠিয়েছে স্থানীয় বিধায়কের কাছে। কিন্তু তাতেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। এতে হতাশ হয়ে পড়েছে গোপাল। স্থানীয় তেরাতরি গ্রামে তাদের অভাবের সংসার। বাবা চন্দন দাস সামান্য বেতনের তেল কলের কর্মী। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর হাল। সংসার, ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালাতেই হিমসিম খেতে হয় তাঁকে। দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। খুব কষ্ট করে ছেলেকে টিউশনি দিয়েছি। কিন্তু, কানে শুনতে না পাওয়ায় তা কোনও কাজেই লাগছে না। স্কুলেও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে।’’

Advertisement

গোপাল জানায়, কানের কাছে খুব জোরে কথা না বললে কিছুই শুনতে পায় না। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই ছাত্রের শ্রবণ-যন্ত্রের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যন্ত্র বরাদ্দ হলেই তা দেওয়া হবে।’’ ময়ূরেশ্বরের বিধায়ক অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। দেখি কি করা যায়।’’ কিছু একটা উপায় হবে, আশায় গোপালও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন