মেলার রাস্তা করার জন্য কোপে টিলা

এ বার বিষ্ণুপুর মেলা হাইস্কুল মাঠের সঙ্গে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল জোড় শ্রেণির মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। সে জন্য জোড় শ্রেণির মন্দির থেকে নন্দলাল মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করতে একটি বড় টিলাকেই উড়িয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৫
Share:

আগে ছিল এমন। ফাইল ছবি

বিষ্ণুপুর মেলা করতে গিয়ে টিলা কেটে রাস্তা তৈরির অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এ নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছেন জনপ্রতিনিধিরাই। পরিবেশ সচেতন মানুষজনের আবার বক্তব্য— টিলা কেটে এ ভাবে জমির চরিত্র বদল করা যায় নাকি?

Advertisement

এ বার বিষ্ণুপুর মেলা হাইস্কুল মাঠের সঙ্গে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল জোড় শ্রেণির মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। সে জন্য জোড় শ্রেণির মন্দির থেকে নন্দলাল মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করতে একটি বড় টিলাকেই উড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগের তির মেলা কমিটির দিকে। বাসিন্দাদের দাবি, মেলা কমিটির মাথা হিসাবে প্রশাসনই যদি প্রয়োজনে টিলা কাটতে পারে, তবে আমজনতা প্রতিকার চাইতে কার কাছে যাবে?

বিষ্ণুপুর ভূমি দফতরের এক কর্তা বলেন, “মন্দির সংলগ্ন টিলা, খাস জমি বা বাঁধেরপাড় থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। অনেক সময় টিলা কেটে মাটি নিতে লোকজন আসে। আমরা খবর পেলে আটকে দিই।” বিষ্ণুপুরের বিধায়ক বলেন, “মন্দির সংলগ্ন প্রাকৃতিক নিয়মে গড়ে ওঠা টিলাগুলি সংরক্ষণের দায়িত্ব কার? পুরাতত্ত্ব বিভাগ কেন টিলা কাটায় বাধা দেয়নি? টিলা কেটে ফেলা যদি নিয়ম বিরুদ্ধ হয়, তবে সবাইকেই তা মেনে চলতে হবে।’’

Advertisement

বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “আমরা এত দিন বিষ্ণুপুরের টিলাগুলির সৌন্দর্য নিয়ে ভাবিনি। কিছু টিলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এগুলি সংরক্ষণের জন্য ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।”

এরই মধ্যে গত রবিবার ছুটির দিনের দুপুরে ঘটে গিয়েছে আর এক ঘটনা। জোড় শ্রেণির মন্দির থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরত্বের মধ্যেই থাকা এক টিলা মেশিন দিয়ে কেটে ফেলেছে ঠিকাকর্মীরা। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “ওই ঘটনায় আমি ব্যথিত। বাইরে থেকে মাটি এনে খানা-খন্দ ভরাট করতে বলেছিলাম ঠিকাদারকে। তাঁরা বুঝতে না পেরে টিলাটাকেই ভেঙে দেয়। আমরা ফের পাথর ও মোরাম দিয়ে ভাঙা টিলা পূরণ করে দেব।’’ তাঁর দাবি, সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি নিয়েই বিষ্ণুপুর মেলার সময় টিলার উপরে কাটছাঁট করা হয়েছে।

হাওড়া থেকে অর্ণব সরকার সপরিবার বিষ্ণুপুরের জোড়শ্রেণির মন্দির প্রাঙ্গণে বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে কৃত্রিম সৌন্দর্য তৈরিতে আমরা ব্যস্ত। টিলা ধ্বংস করে আখেরে বিষ্ণুপুরের প্রকৃত সৌন্দর্যের ক্ষতি করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন