এই সেই অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র
হিন্দিগানের সঙ্গে চলছে তুমুল নাচ। শিক্ষক দিবসের দিনে তোলা এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বীরভূমে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ সেপ্টেম্বর ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজের তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদ। কিন্তু, শিক্ষক দিবসের দিনে কেন ‘চটুল’ নাচগান হবে সেই প্রশ্ন তুলে সমালোচনা শুরু হয়েছে ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবক মহলে।
কলেজেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক দিবসের দিন দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের বইবিলি, রক্তদান শিবির, শিক্ষক সম্মাননার পাশাপাশি নাচগানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই নাচগানেরই একটি অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, মঞ্চে দু’জন তরুণী আর একজন তরুণ হিন্দি গানের সঙ্গে নাচানাচি করছেন। মঞ্চেই ঝুলছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ফ্লেক্স।
ওই কলেজে ছাত্র সংসদ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তৃণমূলের লাভপুর ব্লক যুব সভাপতি প্রসেনজিৎ ভাণ্ডারী। তিনি বলছেন, ‘‘বই বিলি, রক্তদান শিবির, শিক্ষকদের সম্মান জানানোর অনুষ্ঠান হয়েছিল। কোন চটুল অনুষ্ঠান হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে হয়ে থাকলে কাজটা ঠিক হয়নি।’’ কলেজের অধ্যক্ষ নিশীথ মিশ্রও জানিয়েছেন, এমন কোনও অনুষ্ঠানের কথা তাঁরও জানা নেই। মূলত রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতিই পরিবেশিত হয়েছিল।
দেখুন ভিডিয়ো:
ছাত্রছাত্রীদের একাংশ হাততালি দিয়ে ‘শিল্পী’দের অভিনন্দিত করলেও বড়ো সংখ্যক ছাত্রছাত্রীই নাচের ছবি দেখে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলছেন, ‘‘ওই সময় দর্শকাসনে স্যারেরাও ছিলেন। লজ্জায় মঞ্চের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। তাই অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে আসি।’’ কিছু শিক্ষকও জানিয়েছেন, শিক্ষক দিবসের দিনে যে অনুষ্ঠান হয়েছে তা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘মানছি আনন্দ, অনুষ্ঠানেরও প্রয়োজন রয়েছে। তাই বলে ওই রকম ন্যক্কারজনক নাচগান?’’
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক রুদ্রদেব বর্মণ এবং বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়রা একসুরে বলছেন, ‘‘যে দলের যা সংস্কৃতি তাদের রুচি তো সে রকমই হবে।’’