এক ছাদের তলায় হরেক কিসিমের শিল্পের আয়োজন বাঁকুড়ার মেলায়

এক ছাদের নীচে এত রকমের শিল্প সামগ্রী পেয়ে যাওয়াকে বিরাট পাওনা বলে মনে করছেন জেলার মানুষজন। বাঁকুড়ার জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের এই মেলায় তাই ভিড় যেমন হচ্ছে, তেমনই বিক্রিবাটাতে খুশি ভিন্‌ জেলার বিক্রেতারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:১৫
Share:

পরখ: বাঁকুড়া জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম চত্বরে খাদি মেলা। চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। নিজস্ব চিত্র

ডোকরা, টেরাকোটা, বালুচরীর জন্য বাঁকুড়া জেলার খ্যাতি সুদূর প্রসারী। কিন্তু অন্য জেলার শিল্পকর্ম নিয়েও এই জেলাবাসীর কৌতূহল কম নয়। তাঁদের এই আশা পূরণ করে দিয়েছে খাদি মেলা। এক ছাদের নীচে এত রকমের শিল্প সামগ্রী পেয়ে যাওয়াকে বিরাট পাওনা বলে মনে করছেন জেলার মানুষজন। বাঁকুড়ার জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের এই মেলায় তাই ভিড় যেমন হচ্ছে, তেমনই বিক্রিবাটাতে খুশি ভিন্‌ জেলার বিক্রেতারাও।

Advertisement

উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর এই মেলায় ৮০টি স্টল এসেছে। বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা-সহ ১৪টি জেলার হস্ত শিল্পের নানা সামগ্রী এবং ভোজ্য পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন বিক্রেতারা।

মেলা ঘুরে দেখা গেল, খেজুর পাতার ব্যাগ, চামড়ার জুতো, উত্তর চব্বিশ পরগনার ধান, পোড়ামাটির শিল্প সামগ্রী, জার্মান সিলভারের গয়না নজর কেড়েছে। উত্তরবঙ্গের কাঠের চেয়ারের নকশাও তেমনই অনেকের মনে ধরেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের খাদির নানা বস্ত্র, বীরভূমের কাঁথাস্টিচ, হুগলির পাটের নানা শিল্পসামগ্রী, বর্ধমানের ঘর সাজানোর রঙিন ফুলও অনেকে বাছাই করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার খাদ্য রসিকদের জন্য রয়েছে মালদহের তুলাইপাঞ্জি ও বর্ধমানের গোবিন্দভোগ চাল।

Advertisement

উত্তর চব্বিশ পরগনার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা নিয়ে এসেছেন ধান, টেরাকোটা, জার্মান সিলভারের রকমারি গয়না। সেখানে কম বয়েসি মেয়েদের ভিড় বেশি। অলঙ্কার বিক্রেতা মমতা ঢালি বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বছর এখনও পর্যন্ত বিক্রিবাটা বেশ ভালই হচ্ছে। আশা করছি, রোজগার এ বছর বাড়বে।’’ তুলাইপাঞ্জি চাল, ভুট্টার আটা, বড়ি নিয়ে এসেছে মালদহের ইমানুর ইসলাম। কাঠের বিভিন্ন ঘর সাজানোর জিনিসপত্র নিয়ে এসেছেন বর্ধমানের কাষ্ঠশিল্পি বিজয় সূত্রধর। তাঁদের কথায়, ‘‘বিক্রি এতটাই বেড়েছে যে জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছি।’’

মেলা ঘুরে হাতের কাছে এত রকমের জিনিসপত্র দেখে উচ্ছ্বসিত বাঁকুড়ার লালবাজারের গৃহবধূ পিয়ালী পাল বলেন, ‘‘এক জায়গায় এক সাথে গৃহস্থালীর নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেয়ে যাওয়াটা আমাদের খুব বড় পাওনা। এই রকম একটা মেলার আয়োজন করার জন্য জেলা প্রশাসনকে অনেক ধন্যবাদ।’’ সিমলাপাল থেকে আসা দম্পতি বিশ্বজিৎ সিংহ মহাপাত্র ও সুতপা সিংহ মহাপাত্রের কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম আর পাঁচটা মেলার মতো কিছু হচ্ছে। কিন্তু ঢুকে দেখছি, বিরাট আয়োজন। এত রকমের জিনিস এক সাথে পাব, ভাবতেই পারিনি।’’

জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসার ঘটাতে খাদি ও শিল্পজাত দ্রব্য মানুষ যাতে বেশি ব্যবহার করেন এবং শিল্পের প্রসার যাতে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন