Bankura Murder Case

স্ত্রী বাপের বাড়িতে যেতেই ছক কষে তাঁর প্রেমিককে সরালেন স্বামী! বাঁকুড়া হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ত্রিকোণ প্রেম

মঙ্গলবার সকালে লেপাম গ্রামের অদূরে আগইগোড়া সেচখাল সেতুর কাছে সুশীলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যুবকের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন পাওয়া যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কেন সাধারণ এক টোটোচালককে কেউ মেরে ফেলবেন? কার সঙ্গে শত্রুতা থাকতে পারে তাঁর? তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। বারিকুল থানা এলাকায় সুশীল হেমব্রমের খুনের মামলায় পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থেকে বিশ্বজিৎ মুর্মু ওরফে ডোগো নামে এক যুবককে পাকড়াও করল তারা।

Advertisement

সপ্তাহের আর ছ’টা দিনের মতো গত সোমবার টোটো নিয়ে রসপাল বাজারে গিয়েছিলেন লোপাম গ্রামের বাসিন্দা সুশীল। টোটো নিয়ে বসে ছিলেন ভাড়ার অপেক্ষায়। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফেরেননি ৪৫ বছরের যুবরক।

মঙ্গলবার সকালে লেপাম গ্রামের অদূরে আগইগোড়া সেচখাল সেতুর কাছে সুশীলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যুবকের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন পাওয়া যায়। মঙ্গলবার মৃতের আত্মীয় প্রধানচন্দ্র হেমব্রম থানায় খুনের অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে বারিকুল থানার পুলিশ।

Advertisement

২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনের কারণ এবং সন্দেহভাজনকে খুঁজে পায় পুলিশ। উঠে আসে ত্রিকোণ সম্পর্কের ‘তত্ত্ব।’ তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বেশ কিছু দিন ধরে মাঝেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জনৈক বিশ্বজিৎ মুর্মুর স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন টোটোচালক। এটা মেনে নিতে পারেননি বিশ্বজিৎ। তার মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। বেশ কিছু দিন ধরে স্ত্রী বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এই সমস্ত কিছুর নেপথ্যে টোটোচালককে দায়ী করেন বিশ্বজিৎ। ঠিক করেন, স্ত্রীর প্রেমিককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবেন। সোমবার রাতে সেই ‘সুযোগ’ আসে। সুশীলকে একা পেয়ে তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান তাঁর প্রেমিকার স্বামী। খুনের পর টোটোচালকের দেহ সেচখালে ফেলে গা-ঢাকা দেন খুনি। তবে শেষরক্ষা হয়নি। তাঁকে মন্তেশ্বর থেকে ধরে এনেছে পুলিশ।

বুধবার খাতড়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছে ধৃতকে। ৭ দিনের জন্য তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। বাঁকুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশান) মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘তদন্তে জানা গিয়েছে সুশীল হেমব্রমের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বিশ্বজিৎ মুর্মুর স্ত্রীর। সম্প্রতি বিশ্বজিতের স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এ সবের নেপথ্যে স্ত্রীর সঙ্গে সুশীলের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককেই দায়ী করেন বিশ্বজিৎ। তখন থেকেই সুশীলকে খুনের ছক কষেছিলেন অভিযুক্ত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সুযোগ পেয়ে সুশীলকে খুন করে প্রথমে রানিবাঁধে যান বিশ্বজিৎ। সেখান থেকে বাস ধরে প্রথমে বাঁকুড়া এবং পরে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে হাজির হন। সেখান থেকেই আমরা তাঁকে গ্রেফতার করেছি। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারের পাশাপাশি বিশদ তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement