পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরে জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ খাদান বন্ধ থাকার কথা। তা সত্ত্বেও রামপুরহাটের শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চলে বেআইনি ভাবে বেশ কিছু খাদান চালু রাখা হয়েছে— এমনই অভিযোগ তুলে এলাকায় ঘুরে ওই সব খাদান বন্ধ রাখার দাবি তুলল ‘বীরভূম জেলা আদিবাসী গাঁওতা’।
সোমবার শালবাদরার বেশ কয়েকটি খাদান বন্ধ করে দেন সংগঠনের সদস্যেরা। সংগঠনের নেতা রবীন সোরেনের বক্তব্য, ‘‘গাঁওতার পক্ষ থেকে দীর্ঘ দিন থেকে বেআইনি খাদান, ক্রাশার বন্ধ রাখার জন্য আমরা জেলায় আন্দোলন করে আসছি। সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় ওই সব খাদান, ক্রাশার মালিকদের।’’ তাঁর অভিযোগ, তার পরেও একটি বাদে ৪৬টি খাদানের কেউ-ই পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র জোগাড় করেনি। অথচ তাদের অনেকগুলি খাদানই বর্তমানে পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় বেআইনি ভাবে চলছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শালবাদরা পাথর খাদান মালিক সমিতির সম্পাদক সুখেন্দু রায় প্রথমে দাবি করেন, এলাকায় বর্তমানে ৩৩টি খাদান চলছে। এবং তাদের প্রত্যেকেরই সরকারি অনুমোদন রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “২০১৬ সালে পাথর খাদানে দীর্ঘমেয়াদি লিজ বন্ধ করে ই-টেন্ডার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তার পরে পাথর খাদান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করে প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে মামলা করা হয়। মামলাটি বিচারাধীন।” আদালত কি ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে কোনও স্থগিতাদেশ দিয়েছে? সেই প্রশ্ন তুলতেই সুখেন্দুবাবু আগের বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে দাবি করেন, ‘‘আদালত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। আর শালবাদরায় সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনও খাদান চলছে কিনা বলতে পারব না।’’
গাঁওতার অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে এসডিও (রামপুরহাট) সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘শালবাদরায় একটি বাদে অন্য কোনও পাথর খাদান চালানোর ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি অনুমোদন কেউ পায়নি। তার পরেও খাদান চালু থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অন্য দিকে, জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নীলকমল বিশ্বাস জানান, এই মুহূর্তে জেলায় ক্রাশার চালানো নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। আর পাঁচামিতে চারটি খাদান এবং শালবাদরায় একটি খাদান সরকারি অনুমোদন নিয়ে চলছে। সেগুলি বাদে আর কোনও খাদান চালু নেই বলেই ওই কর্তার দাবি।