নাবালক পড়ুয়াকে আদালতে হাজির করানোর মামলায় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের অসন্তোষের মুখে পড়ল জেলা পুলিশ। ওই কাণ্ডে শান্তিনিকেতন থানার ওসি পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় এবং ঘটনার তদন্তকারী অফিসার নারয়ণচন্দ্র নন্দীর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার লিখিত জবাবদিহি নিয়ে বোর্ডের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিল জেলা জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। বুধবার বোর্ডের প্রিন্সিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট জ্যোৎস্না রায় এই নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনা হল, দুর্ঘঠনায় এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় বোলপুরের এক দ্বাদশ শ্রেণির নাবালক পড়ুয়াকে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। নাবালক হওয়া সত্ত্বেও কেন ধৃতকে বোলপুর আদালতে হাজির করিয়েছিল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। তা নিয়ে জোর বিতর্ক হওয়ার পরে নিজেদের ‘ভুল’ শুধরে ধৃতকে সিউড়িতে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করে পুলিশ। জেল হাজত কাটানো ওই নাবালককে সে দিনই জামিন দিয়েছিল ক্ষুব্ধ বোর্ড। ওই দিনই ধরা পড়েছিল, ঘটনায় নাবালককে আদালতে হাজির করানো ছাড়াও নানা রকম ‘ত্রুটি’ রয়েছে। পুলিশ যে ব্যক্তিকে অভিযোগকারী হিসেবে দেখিয়েছিল, তিনি আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে দাবি করেন— ওই অভিযোগ তাঁর নয়। ঘটনার দিন রাস্তায় মৃত ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন। এর বেশি ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছিলেন। পুলিশের বিড়ম্বনার এখানেই শেষ হয়নি। জমা পড়া নথিতে দেখা যায়, অভিযোগ হওয়ার আগেই পুলিশ ওই নাবালককে গ্রেফতার করেছে। হিসেব মতো দু’দিন ধরে গ্রেফতার থাকলেও পুলিশ আদালত বা জাস্টিস বোর্ডের কাছে তাকে হাজির করেনি।
এই কাণ্ড পরিষ্কার হওয়ার পরেই জাস্টিস বোর্ড নাবালকের পরিবারকে পুলিশের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগকে হলফনামা আকারে জমা দিতে পরামর্শ দেয়। গত ১ মার্চ অভিযুক্তের বাবা হলফনামা দিয়ে জাস্টিস বোর্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ জানান। সেই মর্মেই গত ৪ মার্চ ওই দুই পুলিশ আধিকারিককে লিখিত ব্যাখ্যা নিয়ে বোর্ডের সামনে স্বশরীর উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন বিচারক।
এ দিন সেই শুনানি ছিল। কিন্তু তদন্তকারী অফিসার উপস্থিত থাকলেও আইনশৃঙ্খলার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন জানিয়ে হাজির হননি ওসি। কেন এমন ভুল হল, উপস্থিত নারায়ণবাবুর মৌখিক জবাব সন্তুষ্ট করতে পারেনি বিচারককে। তার পরেই আগামী ২২ মার্চ উভয়কে হজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। নির্দেশের প্রতিলিপি জেলশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়ে।