হাতির হানা ঠেকাবে কে, উঠল প্রশ্ন

রাজকোষে টান, শিকেয় নতুন বিভাগ

সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল মাস ছয়েক আগেই। তবে, হাতির হানা ঠেকাতে, রাঢ়বঙ্গের— বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি বনাঞ্চল নিয়ে ‘ওয়াইল্ড লাইফ সাউথ ডিভিশন’ গড়ে তোলা এখনও বিশ বাঁও জলে।

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

আদ্রা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪৭
Share:

রাজার চালে, রাজপথে। দলমা থেকে বাঁকুড়ায় আসা হাতির পাল।—ফাইল চিত্র

সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল মাস ছয়েক আগেই।

Advertisement

তবে, হাতির হানা ঠেকাতে, রাঢ়বঙ্গের— বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি বনাঞ্চল নিয়ে ‘ওয়াইল্ড লাইফ সাউথ ডিভিশন’ গড়ে তোলা এখনও বিশ বাঁও জলে।

চলতি বছরের গোড়ায় বন দফতরের বোর্ড মিটিঙে ওই আলাদা ডিভিশন গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জারি হয়েছিল বিজ্ঞপ্তিও। তবে ওই ডিভিশনের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও থমকে। কেন?

Advertisement

বনদফতর এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, কারণ একটাই, ‘ভাঁড়ার শূন্য’! তিনি বলেন, ‘‘নতুন ওই ডিভিশনে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার দক্ষিণ এবং পুরুলিয়ার কংসাবতী দক্ষিণ বিভাগের প্রায় ৮৪৫.২৩ বর্গ কিলোমিটার বনাঞ্চল সামাল দেওয়ার জন্য নতুন পদ তৈরি করা প্রয়োজন। কিন্তু বন দফতরের কাজকর্ম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এতটাই বিরক্ত যে সে কথা তাঁর সামনে পাড়তেই সাহস পাচ্ছেন না কেউ।’’

তাই, নতুন ডিভিশনের কর্তা-কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রাথমিক খসড় তৈরি হয়েই পড়ে রয়েছে। তা নিয়ে আর নাড়াচাড়া হয়নি।

হাতির হানায় ফসল থেকে গ্রামবাসীদের প্রাণহানি— তিন জেলায় প্রায় নিত্য ঘটনায় দাঁড়িয়েছে। তবে তৃণমূলের নেতারাই বলছেন, ‘‘রাজকোষে হাঁড়ির হাল হলে নতুন বিভাগ খুলবে কী করে!’’

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিভাগের কর্মী আধিকারিকেরা শুধুই হাতি সমস্যা নিয়ে কাজ করবেন। ঘন জঙ্গলে হাতিদের পছন্দসই খাবারের চাষ করে তাদের জঙ্গলেই ধরে রাখার চেষ্টা করা হবে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় হাতিদের যাতায়াত ঠেকানোর জন্য জঙ্গলের বাইরে খোঁড়া হবে ট্রেঞ্চও।

কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরানো দশা যে বন দফতরের তারা নতুন বিভাগ খুলে হস্তী সমস্যা ঠেকাবে কী করে?

বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরেও, হাতির দাপাদাপি ঠেকাতে এখন হুলা পার্টির খরচ জোগানোও দায় হয়েছে বন দফতরের। হুলা পার্টির সদস্যদের কাওয়া দাওয়া, খোরাকি, পোড়া মোবিল, গাড়ির তেল এমনকী নিয়মিত পটকা কেনার ক্ষমতাও এখন বন দফতরের ।

হাতির হানায় প্রাণহাণি হলে ক্ষতিপূরণের টাকাও এখন অনিয়মিত বলেই জানা গিয়েছে।

এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘এই অবস্থায় নতুন বিভাগ! অর্থ দফতরে প্রস্তাব পাঠালে কী উত্তর আসবে তা ভেবেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন