(উপরে) লাইন দিয়ে আসছেন তৃণমূল কর্মীরা। (নীচে) শিবপুরে দলীয় কর্মীদের মাঝে আন্দোলনকারীদের অপেক্ষায় মন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র
শাসকদলের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার অভিযোগ করে স্থানীয় বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বৈঠক এড়ালেন শিবপুর মৌজার আন্দোলনকারী কৃষক ও জমি মালিকেরা। ঘণ্টা খানেক অপেক্ষা করার পরে মন্ত্রী ক্ষোভে ফেটে পড়ে বললেন, আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়া মেনেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত হল। অথচ তাঁরাই কেউ এলেন না! তাঁর হুঁশিয়ারি, স্পষ্ট দাবি বা আলোচনা ছাড়া আন্দোলনের নামে সরকারি কাজে বাধা বেআইনি। এমন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ-প্রশাসন।
ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত জমিদাতাদের একাংশ। সিঙ্গুর মামলার রায়ের পরে, ওই আন্দোলনকারীরা জমি ফেরতের দাবিতে আরও সোচ্চার হন। স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে দাবিদাওয়া জানিয়েছেন আগেই। বোলপুরের শিবপুর মৌজায় প্রস্তাবিত ‘গীতবিতান’ থিম-সিটি তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ওই জমিদাতারা। ভাঙচুর করা হয় ওই প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের থাকার জন্য নির্মীয়মাণ ঘরে।
প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তার পরে সাময়িক ভাবে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার শিবপুরে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ছিল ‘শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ’ (এসএসডিএ) সভাপতি চন্দ্রনাথবাবুর। সেই মতো এ দিন বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ শিবপুর মৌজায় যান মন্ত্রী। প্রস্তাবিত আইটি হাবের জমিতে ওয়েবেলের দফতরে চলে আসেন চন্দ্রনাথবাবু। সঙ্গে ছিলেন বোলপুরের বিডিও শমিক পানিগ্রাহী, এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষ, থানার আইসি সুবীর কুমার চক্রবর্তী, প্রাক্তন আইসি শেখ ফিরোজ হোসেন, এসএসডিএ সদস্য দেবব্রত সরকার প্রমুখ।
আলোচনার খবরে ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন কৃষি জমি বাঁচাও কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক এবং শতাধিক সদস্য। হাজির হয়ে যান রাইপুর- সুপুর এলাকার তৃণমূল নেতা এবং কর্মী-সমর্থকেরা। এ দিকে শিবপুর মৌজায় মন্ত্রীর আসার খবর পেয়ে, এক কিলোমিটার দূরে কাশীপুর বাসস্টপ এলাকায় একে একে জমায়েত হন আন্দোলনকারী জমিদাতা ও কৃষকেরাও। তবে তাঁরা আলোচনার জন্য ওয়েবেলের দফতরের দিকে আর পা মাড়াননি। তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘ভাড়াটে’ লোকজন নিয়ে মন্ত্রী এলাকায় এসেছেন। আলোচনা চলার সময় মন্ত্রীর দলবলের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বৈঠকে তাঁরা যোগ দেবেন না।
এ দিকে, ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পরে কাঁকুটিয়া বিদ্যালয়ে এবং ইলামবাজারের দু’টি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়েন মন্ত্রী। চন্দ্রনাথবাবুর ক্ষোভ, “সকলে দেখেছেন, আমি ঘণ্টা খানেক আলোচনার জন্য অপেক্ষা করলাম। অথচ আন্দোলনকারীরা কেউ আসেননি। যদি তাঁদের সুস্পষ্ট দাবিদাওয়া থাকত, তাহলে নিশ্চয় আসতেন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কারও উস্কানিতে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া বেআইনি। আমরা তবু চেয়েছি আলোচনা হোক। কিন্তু, ওঁরাই যখন আলোচনা চাইছেন না, কী আর করা যাবে।’’
বৈঠকে বসার জন্য দলবল নিয়ে আসার অভিযোগ অস্বীকার করে মন্ত্রী প্রশ্ন, ‘‘কারা ভাড়াটে? যারা এখানে শিল্পের জন্য, কর্মসংস্থানের জন্য আন্দোলন করছিল তারা, ভাড়াটে? পুলিশ, প্রশাসন পঞ্চায়েত, এসএসডিএ ভাড়াটে? উন্নয়ন বিরোধী এবং দুষ্কৃতীদেরই এই কাজ বলেই আমি মনে করি।’’
নির্যাতনে ধৃত। এক শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বর্ধমানের গলসি থানার সত্যানন্দপুরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার দুপুরে আট বছরের ওই মেয়েটি বাড়িতে খেলা করার সময় চকোলেটের লোভ দেখিয়ে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় জীবনকৃষ্ণ অধিকারী (৬৯) নামে ওই বৃদ্ধ। কিছুক্ষণ পরে স্নানেন জন্য মেয়েকে ডাকাডাকি করেন মা। খুঁজে না পেয়ে পাড়ায় বের হন। তখনই ধৃতের বাড়ির কাছে থেকে মেয়ের কান্নার আওয়াজ মেলে বলে তাঁর দাবি। মায়ের অভিযোগ, দু’বার ডাকতেই কাঁদতে কাঁদতে মেয়ে বেরিয়ে আসে। দেখেই বুঝতে পারি কী হয়েছে। এরপরেই পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে গলসি থানায় খবর দেন। জীবন বাড়ি থেকে পালালেও পরে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। ওই বালিকার বাবার অভিযোগ, টাকার লোভ দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে বলে জীবন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এ দিন জীবনকে ধরার দাবিতে মিছিলও করেন বাসিন্দারা। পরে কুলগড়িয়া গ্রাম থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।