চোদ্দো মাসেই সাজা

মহিলাকে খুনের দায়ে প্রৌঢ়ের যাবজ্জীবন

আদিবাসী মহিলাকে খুনের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনালেন সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক সুপ্রতীম ভট্টাচার্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৫৮
Share:

আদিবাসী মহিলাকে খুনের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনালেন সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক সুপ্রতীম ভট্টাচার্য।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্তের নাম পরেশ বাগদি। মহম্মদবাজারের ভুতুড়া অঞ্চলের মনপুর গ্রামের বাসিন্দা পরেশের বাড়ির উঠোন খুঁড়ে রাজ্যধরপুর গ্রামের বাসিন্দা বড়দি সরেনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বড়দির সম্পর্কিত কাকা মঙ্গলা টুডুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পরেশকে গ্রেফতার করে। ঘটনাটি গত বছরের ২৯ এপ্রিলের। সেই হিসেবে মাত্র ১৪ মাসের মাথায় এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হল।

পুলিশ সময় মতো চার্জশিট দেওয়ায় পরেশকে জেল হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরেশের বিরুদ্ধে ৩০২ ও ২০১ ধারায় মামলা চলছিল। সরকারি আইনজীবী জানান, দুটি ধরাতেই দোষ প্রমাণিত হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেল, এবং ২০১ ধারায় পাঁচ বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার (অনাদায়ে আরও তিন মাস জেল) সাজা দেন বিচারক সুপ্রতীম ভট্টাচার্য।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বামী মারা যাওয়ার পরে দুই শিশুপুত্রকে নিয়ে রাজ্যধরপুর গ্রামে মা-বোনের সঙ্গে থাকতেন বড়দি সরেন। পরে রাজ্যধরপুর গ্রামের চোলাই মদ ব্যবসায়ী পরেশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয় বলে দাবি। গত বছর তাঁর দেহ উদ্ধারের ক’দিন আগে থেকে বড়দিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বোন মাকু সরেন ও স্থানীয় লোকজন খোঁজাখুজি শুরু করেন। তখনই তাঁরা লোকমুখে জানতে পারেন দিন তিনেক আগে বড়দিকে মনপুরের পরেশের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। সেই সূত্রেই খোঁজ পরে পরেশের বাড়ির। বোন ও পরিজনেরা সেখানে গিয়ে দেখেন, বাড়ির ভিতর থেকে পচা গন্ধ বের হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন তাঁরা। বিডিও-র উপস্থিতিতে পুলিশ বাড়ির উঠোনে থাকা কলাগাছের কাছে বালি সরিয়ে মাটি খুড়ে বড়দির দেহ উদ্ধার করে। বড়দির কাকার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রাতেই পরেশকে পুলিশ ধরে।

এ দিকে, জেলা পুলিশের দাবি, ওই ঘটনায় পুলিশি জেরায় পরেশ খুনের কথা স্বীকার করে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে মেরে বাড়ির কলাগাছের কাছে গর্ত করে পুঁতে বালিচাপা দিয়ে দেয় পরেশ। বড়দিকে নিয়ে ছেলেদের সঙ্গে অশান্তির কারণেই খুন বলে স্বীকারও করে।’’ অন্য দিকে, সরকারি আইনজীবী জানান, এ দিন বিচারক পরেশের কাছে জানতে চান এই মামলায় সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি। সাজা প্রসঙ্গে তাঁর কি ইচ্ছে? দুই ছেলেমেয়ের কথা বলে সাজা কম করার আবেদন জানায় পরেশ। সরকারি আইনজীবী অবশ্য পরেশের আবেদনের বিরোধীতা করে সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেন। তবে, পরেশের শাস্তিতে খুশি নিহতের পরিজনেরা। তবে, বহু চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত পরেশের পরিবারের সঙ্গে এ দিন কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন