কোথাও নয় অনুমতি

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘হেলিকপ্টার নামার জন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) লাগে। আমরা বিজপির নেতাদের সেগুলি জমা দিতে বলেছিলাম। কিন্তু ওঁরা জমা করেননি। ফলে হেলিকপ্টার নামার অনুমতি দেওয়া সম্ভব হয়নি।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৪
Share:

দু’দিকে: জয়পুরের চাষমোড়ে তৃণমূলের সভার প্রস্তুতি। পুরুলিয়া মফস্সল থানার নবকুঞ্জ মাঠে চলছে বিজেপির মঞ্চ তৈরির কাজ। সোমবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় নামার জন্য প্রশাসনের অনুমতি পেল না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হেলিকপ্টার। সভা করার অনুমতি দিল না পুলিশও।

Advertisement

তবে মঙ্গলবার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ভাঙড়ার নবকুঞ্জ মাঠে সভা করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকছে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। তবে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘বিজেপি যে মাঠে সভা করছে সেই মাঠের জমির মালিকদের একাংশ সভা করার ক্ষেত্রে তাঁদের আপত্তি স্থানীয় থানায় জানিয়েছে। তাই অনুমতি দেওয়া হয়নি।”

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘হেলিকপ্টার নামার জন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) লাগে। আমরা বিজপির নেতাদের সেগুলি জমা দিতে বলেছিলাম। কিন্তু ওঁরা জমা করেননি। ফলে হেলিকপ্টার নামার অনুমতি দেওয়া সম্ভব হয়নি।”

Advertisement

মঙ্গলবার ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ শীর্ষক সভা করার কথা বিজেপির। সেই সভায় যোগী আদিত্যনাথ প্রধান বক্তা হিসাবে থাকছেন বলে বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই জোরকদমে জেলা জুড়ে প্রচার শুরু হয়েছিল। সোমবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে দু’টি সভা করার কথা ছিল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর। শেষ পর্যন্ত তাঁর কপ্টার নামার অনুমতি ওই দুই জেলার প্রশাসন দেয়নি। সভায় আসতে পারেননি যোগী আদিত্যনাথ। পুরুলিয়ার ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে কি না সেই প্রশ্ন ঘুরছে বিজেপির অন্দরেই।

এ দিন ভাঙড়ার ওই মাঠে গিয়ে দেখা গেল, জোরকদমে চলছে মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ। সভাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে তৈরি করা হয়েছে হেলিপ্যাড। সেখানে দাঁড়িয়ে বিদ্যাসাগরবাবু দাবি করেন, মাঠের জমির মালিকদের সবাই সভা করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। সেই নথি পুলিশকে জমাও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।

বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘সভাস্থলের পাশেই যোগীজির হেলিকপ্টার নামার জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম। প্রশাসন দিলে ভাল। না হলে যোগীজি ঝাড়খণ্ডের রাঁচী, বোকারো বা এই রাজ্যের অণ্ডাল বা কলকাতায় নেমে সড়কপথে সভায় আসবেন।”

তবে তিনি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই। বিদ্যাসাগরবাবুর কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কোথায় নামবেন সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্থির করবে। আমরা সামগ্রিক পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”

মঙ্গলবার সভা হওয়ার কথা ছিল বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন আড়ালবাঁশি এলাকাতেও। সোমবার সেটি বাতিল করেছে বিজেপি। দলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের বক্তব্য, ‘‘আমরা মহকুমাশাসক এবং জেলাশাসকের কাছে সভা এবং হেলিকপ্টার নামার অনুমতি চেয়ে ২৯ জানুয়ারি আবেদন করেছিলাম। অনুমতি দেওয়া হয়নি। যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে নেওয়ার পরেও তাই সভা বাতিল করতে হয়েছে।’’

তাঁর অভিযোগ, পুলিশ এবং প্রশাসন শাসকদলের হয়ে গা-জোয়ারি করছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস অবশ্য বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর জানিয়েছে, হেলিপ্যাডে রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কিছু কাজ চলছে।’’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও-এর বক্তব্য, ‘‘সুরক্ষা সংক্রান্ত কিছু সমস্যার জন্য সভার অনুমতি দেওয়া যায়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন