বালির গাড়ি আটকে দিল ক্ষুব্ধ জনতা

মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি তোলা ও অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ির বিরুদ্ধে পথে নামলেন এলাকাবাসী। বেশি বালি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে একটি ট্রাকও আটকে দিলেন তাঁরা। রবিবার ওন্দার ভাদুলডাঙা এলাকার ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ওন্দা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪১
Share:

দেদার: ওন্দার চাবরা বালিঘাটে নিয়ম ভেঙে যন্ত্র দিয়েই চলছে বালি তোলা। নিজস্ব চিত্র

মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি তোলা ও অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ির বিরুদ্ধে পথে নামলেন এলাকাবাসী। বেশি বালি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে একটি ট্রাকও আটকে দিলেন তাঁরা। রবিবার ওন্দার ভাদুলডাঙা এলাকার ঘটনা। এ দিন সকালে দ্বারকেশ্বর নদ থেকে বালি তুলে চাপড়া ঘাট থেকে ওন্দা চৌমাথা মোড়ের দিকে যাচ্ছিল একটি ট্রাক। পথে ভাদুলডাঙা এলাকায় গাড়িটি আটক করেন এলাকাবাসী।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, চালানে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তার ঢের বেশি বালি নিয়ে যাচ্ছিল ওই ট্রাক। হামেশাই ওভারলোড করা ট্রাক যাচ্ছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই বালি ঘাটের লিজ দেওয়া হলেও যতটা এলাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তার থেকে বেশি এলাকাজুড়ে বালি তোলা হচ্ছে। নিয়ম ভেঙে মেশিন লাগিয়ে বালি কাটা হচ্ছে সেখানে।

এলাকাবাসীদের দাবিগুলি যে ভিত্তিহীন নয়, তা মানছেন প্রশাসনের একাংশও। এ দিন এলাকায় গিয়ে ওই বালিঘাটে মেশিন দিয়ে বালি তুলতে দেখা গিয়েছে। শুধু সেখানেই নয়, দ্বারকেশ্বর নদের বিভিন্ন এলাকাতেই বালি কাটতে মেশিনের যথেচ্ছ ব্যবহার দেখা যায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, মেশিন দিয়ে বালি তোলা যায় না। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

Advertisement

ওন্দা থানার ওসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বালির গাড়িটিকে আটক করে থানায় আনতে ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু অবরোধকারীরা গাড়ি ছাড়তে রাজি হননি। অবরোধকারীদের মধ্যে সুজয় কাইতি, রামদাস দুয়ারি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তায় ১০ টনের বেশি ভারি গাড়ি চলাচল করা আইন বিরুদ্ধে। অথচ তার পরেও নিয়ম ভেঙে গাড়ি চলছে!” তাঁদের দাবি, গ্রামের রাস্তায় অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ির চলাচল বন্ধ করতে প্রশাসনকে সক্রিয় হতে হবে। চাপড়ামোড় থেকে ওন্দা চৌমাথা রাস্তায় বালি গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিও তুলেছেন তাঁরা।

ওন্দার বিডিও শুভঙ্কর ভট্টাচার্য মেশিন দিয়ে বালি তোলা ও অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ি চলাচল রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ নিয়ে আজ সোমবার একটি বৈঠক ডেকেছেন তিনি। পুলিশ ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ওই বৈঠকে আলোচনা করে বালিঘাটের মালিকদের নোটিস পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “মেশিন দিয়ে বালি তোলা ও অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ি চলাচলের অভিযোগ আমি পেয়েছি। নোটিস দিয়ে ঘাটের মালিকদের সতর্ক করা হবে। তারপরেও নিয়ম না মানলে ঘাট মালিকদের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য জেলায় আবেদন করব।”

অন্য দিকে, শুক্রবার অবৈধ ভাবে বালি তোলা রুখতে গিয়ে তালড্যাংরার সাবড়াকোন এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে এক জনকে সে দিনই গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রতিবাদে শনিবার সাত ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করা হয়। তারপরে আরও তিন জনকে হামলায় যুক্ত অভিযোগে গ্রেফতার করা হল। ওই অবরোধে স্থানীয় আমড্যাংরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অভিজিৎ পাঁজা সামিল হয়েছিলেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী রবিবার বলেন, “আমি ওই উপপ্রধানকে জেলা পরিষদে ডেকে কেন দলনেত্রীর নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে পথ অবরোধে নামলেন তা জানতে চাইব। দলের কোর কমিটির বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনা হবে।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “অবৈধ ভাবে বালি তোলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন