রেলগেট কেন বন্ধ, অবরোধ উড়ালপুল

চালু হয়েছে উড়ালপুল। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রেলগেট। আর তার জেরেই বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের শহরে পৌঁছনোর শর্টকাট রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উড়ালপুল দিয়ে অনেকটা ঘুরে শহরে যাতায়াত করতে বলায় প্রতিবাদে পথে নামলেন বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০২:৩৮
Share:

বাঁকুড়ার ভাদুলে উড়ালপুল চালু হতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় রেলগেট। তাই উড়ালপুলের রাস্তা শুক্রবার ঘণ্টাখানেক বন্ধ করে দিলেন বাসিন্দারা।—নিজস্ব চিত্র

চালু হয়েছে উড়ালপুল। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রেলগেট। আর তার জেরেই বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের শহরে পৌঁছনোর শর্টকাট রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উড়ালপুল দিয়ে অনেকটা ঘুরে শহরে যাতায়াত করতে বলায় প্রতিবাদে পথে নামলেন বাসিন্দারা।

Advertisement

রেলগেট খুলে দেওয়ার দাবিতে উড়ালপুলের রাস্তা আটকে অবরোধ করলেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে বাঁকুড়ার ভাদুল, শ্যামদাসপুর, সুর্পানগর, মালাতোড়ের মতো দ্বারকেশ্বর নদের তীরবর্তী বেশ কিছু গ্রামের মানুষ আন্দোলনে নামেন।

বস্তুত, বাঁকুড়া শহরের প্রবেশপথ ভাদুল এলাকায় মেদিনীপুর-আদ্রা ও পূর্বতন বিডিআর শাখার দু’টি আলাদা রেলগেট রয়েছে। দু’টি রেলগেটের দুরত্ব একশো মিটারের মধ্যেই। পূর্বতন বিডিআর শাখার রেলগেট পার হওয়ার পরেই রাস্তার পাশে একটি রাস্তা নেমে গিয়েছে। সেই রাস্তাটিই ভাদুল-সহ বিভিন্ন গ্রামে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা ছিল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার উড়ালপুল চালু হওয়ার পরেই দু’টি রেলগেটই নোটিস দিয়ে বরাবরের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, এর ফলে বহু গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। তাঁদের দাবি, রেলগেটে লোক চলাচলের জন্য জায়গা করে দিতে হবে রেলকে। ভাদুলের বধূ লোটন বাউরি, লক্ষ্মী গড়াই বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে দ্রুত শহরে পৌঁছতে পারতাম আমরা। হাতের কাছেই বাসস্টপ, বাজার ছিল। কিন্তু রেলগেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামের ভিতর দিয়ে অন্তত দুই কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে ঘুরপথে আমাদের শহরে ঢুকতে হচ্ছে। খুবই অসুবিধায় পড়লাম আমরা।”

শ্যামদাসপুরের বাসিন্দা ষষ্ঠী গড়াই, বিজয় যোগাশ্রম পল্লির বাসিন্দা শান্তি দত্তদের কথায়, ‘‘এই সব গ্রামের লোকেরা শহরে গিয়ে কেউ রিকশা চালান, কেউ দিন মজুরি করে সংসার চালান। এই রাস্তাটি ধরে গ্রামবাসীরা দ্রুত কাজে যেতে পারতেন। অন্যদিকে ঘুরপথে যে রাস্তাটি রয়েছে সেটি অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ। তাতে চার চাকার গাড়ি ঢোকাও খুব সমস্যার।’’ তাঁদের দাবি, এর ফলে গ্রামগুলি কার্যত শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

একই দাবি ভাদুলের বাসিন্দা দেবপ্রসাদ ঘোষ, বনমালি ঘোষদেরও। তাঁরা দাবি করেন, বরাবর এই রাস্তা ব্যবহার করেই তাঁরা যাতায়াত করেন। ঘুরপথে যেতে গেলে শহরে পৌঁছতে অনেকটাই সময় লেগে যাবে। রাস্তাটিও খুব সঙ্কীর্ণ।

এ দিন সকালে ঘণ্টাখানেক উড়ালপুল অবরোধের জেরে শহরের মুখে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রশাসন দাবিটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “উড়ালপুল হলে রেলগেট বন্ধ হবে, এটাই নিয়ম। তবে গ্রামবাসীরা যেহেতু ওই রাস্তাটিই ব্যবহার করতে অভ্যস্ত তাই তাঁরা আপত্তি তুলছেন। মহকুমাশাসককে আমি গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলেছি।”

আজ শনিবার, বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসক অসীমকুমার বালার সঙ্গে গ্রামবাসীদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন