ভোট-বাজারে চুলে পদ্ম ‘আঁকতে’ ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন

গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবেও ফ্যাশন বাদ যাবে কেন! বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি সমর্থকদের কেউ কেউ তাই ‘কমল ছাঁট’-এ চুল সাজাচ্ছেন মহম্মদবাজারের হরিণসিঙ্গার এক নাপিতের কাছে। সে জন্য নিজের ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন দয়াময় ভাণ্ডারি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৭
Share:

চুলের ছাঁটে ‘ফ্যাশন’-এ নজর কাড়তে চান তরুণ প্রজন্মের অনেকেই। নতুন আদলে চুল কেটে, নানা রঙে রাঙিয়ে ভিড়ে নিজেকে আলাদা করে চেনাতে চান তাঁরা। পুজো-পার্বণ, বিশ্বকাপের মরসুমে দেখা যায় নতুন ‘লুক’।

Advertisement

গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবেও ফ্যাশন বাদ যাবে কেন! বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি সমর্থকদের কেউ কেউ তাই ‘কমল ছাঁট’-এ চুল সাজাচ্ছেন মহম্মদবাজারের হরিণসিঙ্গার এক নাপিতের কাছে। সে জন্য নিজের ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন দয়াময় ভাণ্ডারি। সাড়াও মিলেছে তাতে। দয়াময়বাবুর দাবি, ইতিমধ্যেই এলাকার ৬ জন যুবক চুলে পদ্ম ‘এঁকেছেন’। ভোট-বাজারে এমন ছাঁটের চাহিদাও তুঙ্গে।

দয়াময়ের মতো বিজ্ঞাপন না দিলেও, জেলার বিভিন্ন সেলুন-মালিকের অভিজ্ঞতা, আগের নির্বাচনে তৃণমূল ও সিপিএমের প্রতীকে চুল কেটেছেন কেউ কেউ। এ বারও হয়তো অনেকে আসবেন।

Advertisement

সেলুন-মালিকদের একাংশ জানান, চুলের স্টাইলে সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের আদলের চাহিদা ছিল অনেক আগে থেকেই। সত্তরের দশকে ছিল ‘অমিতাভ ছাট’। আশির দশকে বাজার ছিল ‘মিঠুন কাটের’। যা অমিতাভকেও টেক্কা দিয়েছিল। তবে ইন্টারনেট, কেবল টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে এখন চুলের স্টাইল শুধু রূপোলির পর্দার নায়ক-নায়িকায় আটকে নেই। ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, ব্যাডমিন্টন, অ্যাথলেটিক্স থেকে সিরিয়ালের অভিনেতা— পছন্দের তালিকা আরও বেড়েছে।

গত দুর্গাপুজোয় চাহিদা ছিল ‘হাইলাইট’ স্টাইলের। সেলুন-মালিকেরা জানান, অনেকে চুলে নানা রং করান। চুলের কিছুটা অংশে আলাদা রং করাই ‘হাইলাইট’। মেয়েদের চাহিদায় ছিল ‘লেয়ার কাট’, ‘স্ট্রেট কাট’, ‘স্ট্রেট উইথ লেয়ার’। ছেলেদের জন্যে ছিল স্পাইক। শহর থেকে গ্রাম— নজরে পড়েছে সেই আদল। বিজেপি সমর্থক দয়াময় বলছেন, ‘‘ফুটবল বা ক্রিকেট বিশ্বকাপ এলেই বিভিন্ন দেশের খেলোয়ারদের চুলের ছাঁট নকল করার হিড়িক পড়ে। ভোট-ই বা বাদ যাবে কেন? সে জন্যই ভিন্ন ভাবনা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গোটা ব্লক জুড়ে বিজেপি হাওয়া। তাই ভাবলাম ভোট-প্রচারে যদি নিজের বিদ্যা কাজে লাগানো যায়। ১৮ বছর ধরে তো চুলই কাটছি।’’ তিনি জানান, প্রথমে সেলুনের সামনেই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। তারপর ফেসবুকে। সাড়াও মিলতে শুরু করেছে হরিণসিঙ্গা

কালীমন্দির লাগোয়া সেলুনে। স্থানীয় যুবক উত্তম দত্ত, আনন্দ রাউত, যশ হেমব্রম, রাজু হেমব্রমে ‘কমল ছাঁট’ চুল কেটেছেন ইতিমধ্যেই। মাথার পিছনে সমান করে চুল ছেঁটে আঁকা হয়েছে পদ্মফুল। এলাকার ওই যুবকেরা বলছেন, ‘‘একটু আলাদা ভাবে চুল কাটালাম। যেখানেই যাচ্ছে সবাই দেখছে। ভোট মিটলে আগের স্টাইলেই ফিরব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন