পর পর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বেশ কয়েক দিন ধরে হাজতে দলের প্রভাবশালী নেতা-কর্মীরা। লোকসভা ভোটের আগে তাই লাভপুরে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছে বিজেপি। দলের অন্দরমহলের খবর এমনই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে লাভপুর থানা এলাকার এক বিজেপি নেতার স্কুলশিক্ষিকা মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। সেই সময় ওই বিজেপি নেতা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক আক্রোশে শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর মেয়েকে অপহরণ করেছে। খবর ছড়াতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা টানা তিন দিন কার্যত লাভপুর অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিক্ষোভের আঁচ অন্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় ঢুকতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম।
অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা বিধায়কের সঙ্গে থাকা দু’টি গাড়ি ভাঙচুরও করে। থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও ঢিল ছোড়া হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ এবং ক্যাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু ‘অপহরণের’ তিন দিন পরে ডালখোলা স্টেশন থেকে ওই বিজেপি নেতার মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তকারীরা দাবি করেন, রাজনৈতিক যড়যন্ত্র করে ওই বিজেপি নেতাই নিজের মেয়েকে অপহরণ করিয়েছিলেন।
ওই বিজেপি নেতা সহ আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আরও ৩৭ জনের নাম সহ ১৫১ জনের বিরুদ্ধে থানা ভাঙচুর এবং হামলার অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। তাদের মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়৷
ধৃতদের মধ্যে স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল সহ এলাকার কয়েক জন প্রভাবশালী নেতা-কর্মীও রয়েছেন। ওই মামলায় কয়েক জন অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন পেলেও বাকিরা এখনও হাজতে রয়েছেন৷ শুক্রবারও তাদের জামিনের আর্জি খারিজ করে আদালত।
দলের অন্দরমহলের খবর, এর ফলে লাভপুর এলাকায় ভোট প্রচারে সমস্যায় পড়েছে বিজেপি। দলের জেলা সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘শাসকদলের নির্দেশেই পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। রাজনৈতিক আক্রোশে গ্রেফতারি এড়াতে অনেকেকে পালিয়ে বেড়াতেও হচ্ছে। এর ফলে ওই এলাকায় ভোটের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’’
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। পুলিশ আইনমাফিক কাজ করেছে।’’ পুলিশও বিজেপির ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।