ব্যবসায় ভাঁটা। ফাঁকা কারখানায় ব্যবসায়ী। সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র
পরিবেশবান্ধব ভোট করাতে চায় নির্বাচন কমিশন। তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ফ্লেক্স ব্যবসায়ীদের।
তাঁদের অনেকে জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনেক জায়গায় ভোট-ই হয়নি। সেই সময় মোটা অঙ্কের লোকসান হয়। কমিশন পরিবেশবান্ধব প্রচার সামগ্রী ব্যবহারের কথা বলায় ফ্লেক্স-এর চাহিদা লোকসভা ভোটে কেমন থাকবে, তা নিয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ীরা।
তাঁদের অনেকে জানিয়েছেন, নির্বাচন-নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে প্রায় দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও, তেমন ভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেই বরাত মেলেনি। এ নিয়ে বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু কয়েক দিন আগে বলেছিলেন, ‘‘এমন নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের তরফে এসেছে। আমরা চেষ্টা করব, যত সম্ভব সেই নির্দেশ পালন করতে।’’
ফ্লেক্স ব্যবসায়ীরা বলছেন— ‘নির্বাচন কমিশনের বার্তার জেরে এখনও পর্যন্ত ফ্লেক্সের বরাত তেমন মেলেনি।’ তাঁরা জানান, আগের লোকসভা ভোটেও এই সময়ে প্রচুর ভিড় ছিল তাঁদের কারখানায়। মোটা অঙ্কের লাভও হয়েছিল। এ বার সেই ছবির দেখা মিলছে না।
সিউড়ির ফ্লেক্স ব্যবসায়ী চিন্তা মণ্ডল বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলাম। আশায় ছিলাম, ভোটের মরসুমে ভাল বরাত মিলবে। কিন্তু বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোটে অনেক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। লোকসভা ভোটেও এখনও পর্যন্ত কোনও বরাত পাইনি। দেখা যাক পরে কী হয়।’’
শুধু ফ্লেক্স ব্যবসায়ীরাই নয়, কমিশনের নির্দেশে বিপাকে রাজনৈতিক দলগুলিও। কারণ, ফ্লেক্স-ব্যানারই প্রচারের মূল সামগ্রী। বিকল্প হিসেবে কী ব্যবহার করা যাবে, তা ধন্দ রয়েছে তাদের। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মতে, ‘‘ব্যানার-ফ্লেক্স-পতাকায় প্লাস্টিকজাত দ্রব্য মিশে থাকে। এ বার তা হলে কী করা যাবে?’’
তবে নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগে খুশি সাধারণ মানুষ। অনেকেই বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলি কার্যত সব সময়েই একে অপরের বিরোধিতা করে। অন্তত এই বিষয়ে এক মত হতে পেরেছে সবাই।’’ অনেকে বলছেন, ‘‘যখন প্রতিটি দল ব্লকে ব্লকে প্রচার শুরু করবে, তখন ওই নির্দেশ কতটা পালন করা হয় সেটাই দেখার।’’