বাড়ির পাশের রাস্তায় ভারি বুটের শব্দ শুনে হকচকিয়ে বিছানা ছেড়েছিলেন সারেঙ্গার অনেক বাসিন্দা। উঠে দরজার ফাঁকে উঁকি মারতেই জওয়ানরা এসে হাজির। জানতে চেয়েছেন, গ্রামের পরিবেশ ঠিক আছে কি না? বাইরের কেউ এসে অশান্তি পাকাচ্ছে কি না? কোথাও প্রাইমারি স্কুলে গিয়েছেন। কোথাও কথা বলতে গিয়েছেন গ্রামের আটচালায়। সঙ্গে ছিল সারেঙ্গা থানার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ একদা মাওবাদী অধ্যুষিত সারেঙ্গা থানা এলাকার কয়েকটি গ্রামে জওয়ানদের নিয়ে টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করেন সারেঙ্গা থানার আইসি অভিজিৎ দাস। তিনি জানান, সারেঙ্গা এলাকায় এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসেনি। এলাকার শান্তি সুনিশ্চিত করতে খাতড়া মহকুমা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বারিকুল থানা থেকে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে এ দিন স্পর্শকাতর বুথ এলাকাগুলিতে টহল দেওয়া হয়। অভিজিৎবাবু জানান, সারেঙ্গা ব্লক এলাকায় ৯৮টি বুথ রয়েছে। যার মধ্যে গোয়ালবাড়ি, পিড়লগাড়ি, শুখাডালি, তেলিজাত, হাবড়া, কেশিয়া, আঁধারিয়া-সহ মোট স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ২৪টি। এই বুথগুলিতেই এ দিন টহল দেওয়া হয়েছে। কথা বলা হয়েছে গ্রামের মানুষের সঙ্গে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আঁধারিয়া গ্রামের পার্থসারথি মহান্তি, দীপক মাহাতোরা বলেন, ‘‘সকালে জওয়ানদের টহল দেখে প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। মাওবাদী সক্রিয়তার সময়ে এই বুটের শব্দটা প্রায়ই শুনতাম। কিছুক্ষণ পরেই বুঝলাম, ভোটের জন্য টহল হচ্ছে।’’ এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘দিন দুয়েক আগে খাতড়া মহকুমা এলাকায় ৩ কোম্পানি সিআরপি এসেছে। খাতড়া, বারিকুল ও সেরেঙসগড়া ক্যাম্পে এক কোম্পানি করে রাখা হয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে টহল দিচ্ছেন।’’
অন্য দিকে, নির্বাচনের দিন দশেক আগে পাত্রসায়রে পৌঁছে গেল কেন্দ্রীয় বাহিনী। পাত্রসায়রের হলুদবনি, বালসি, বামিরা-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রুট মার্চ শুরু করে তারা। পাত্রসায়রের কুশদ্বীপ অঞ্চলে রুট মার্চ হয়। সঙ্গে ছিলেন পাত্রসায়র থানার আধিকারিকেরা।
আগে নির্বাচনের সময়ে অশান্তি হয়েছে, পুরুলিয়ার ঝালদার এমন এলাকাগুলিতে টহলদারি শুরু করল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুধবার এসডিপিওর (ঝালদা) নেতৃত্বে ঝালদা ১ ব্লক এলাকার হোসেনডি, কাঁটাডি, বাগানডি, পাটঝালদা থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় চলে টহলদারি। এসডিপিও সুমন্ত কবিরাজ বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে লং রুট পেট্রলিং শুরু করে দিয়েছি। টহলদারি নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।’’