সিমলাপালের লাল ময়দানে বিজেপির জনসভায়। নিজস্ব চিত্র
‘ক্যাডার-রাজ’ এবং ‘সিন্ডিকেট-রাজে’র প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে খোঁচা দিলেন বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। বিষ্ণুপুরে সভার অনুমতি না পাওয়ায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করতেও ছাড়লেন না। যদিও পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে ধর্তব্যের মধ্যে না এনে কার্যত তাঁকে উপেক্ষাই করল রাজ্যের শাসকদল। বিপ্লববাবুর উদ্দেশে বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের তীর্যক মন্তব্য, ‘‘ওঁর সভায় তো মাঠ ফাঁকা ছিল। তাহলে উনি যা বললেন, তা শুনলো কে?’’
শুক্রবার বাঁকুড়ার সিমলাপাল এবং বিষ্ণুপুরে সভা করার কথা ছিল বিপ্লববাবুর। সিমলাপালে সভা হলেও অনুমতি না থাকায় বিষ্ণুপুরে সভা করতে পারেননি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করে সিমলাপালের সভায় মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেতে চেয়েছেন বিপ্লববাবু। তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘‘দিদি ভারতীয় পরম্পরা এবং সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছেন। ভারতীয় সংস্কৃতিতে ‘অতিথি দেবো ভবঃ। কিন্তু এখন অতিথিদের ভয় পাচ্ছেন তিনি। দিদি প্রতিবেশী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও তাঁর রাজ্যে সভার অনুমতি দিচ্ছেন না। কারণ দিদি এখন মোদীকে ভয় পাচ্ছেন।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরে যে জায়গায় সভা করবে বলে বিজেপি ঠিক করেছিল, সেই জায়গার মালিক সভার অনুমতি দেননি।’’
সিমলাপালের সভায় বিপ্লবের বক্তৃতায় আগাগোড়া ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দিদি ‘ড্রয়িং রুমে’ বন্দি থেকে গিয়েছেন। মোদী প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের রান্না ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন। দিদি এখন মোদিকে ভয় পাচ্ছেন। ‘মোদী মোদী মোদী’ বলে চিৎকার করছেন। ফলে সারা রাজ্যের সাথে বাঁকুড়াও আজ মোদীময় হয়ে গেছে।’’ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিয়েছেন সুব্রতবাবু। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এক জন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এমন হাস্যকর কথা বলেন কী করে? তবে এরকম হাস্যকর মন্তব্য উনি আগেও করেছেন বলে কাগজে পড়েছি।’’
কেন মুখ্যমন্ত্রী ‘ভয়’ পাচ্ছেন, তার ব্যাখ্যাও নিজের মতো করে দিয়েছেন বিপ্লববাবু। তাঁর দাবি, ‘‘দিদির আশঙ্কা, ২০২১ সালে এ রাজ্যে প্রতিটি আসনে তাঁদের জামানত জব্দ হবে।’’ ত্রিপুরার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় এখন দূরবীন দিয়ে কমিউনিস্টদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ রাজ্যে দিদির ভাইদেরও তাই হবে। দূরবীন দিয়ে দেখা যাবে না।’’ এর পর সভামঞ্চে থাকা বিজেপির বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী সুভাষ সরকারের দিকে তাকিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা একটা পদ্মফুল উপহার দেন। এ রাজ্যে গুন্ডারাজ শেষ করুন। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করুন। ক্যাডার রাজ, সিন্ডিকেট রাজ শেষ করুন।’’
বিপ্লববাবুর অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরুপ খাঁ বলেন, ‘‘যে রাজ্যে খুনের রাজনীতি চলছে , সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’’