পুরুলিয়ার সভায় মমতা ও রায়বাঘিনী ময়দানে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো ও সুজিত মাহাতো
দুই জেলায় তাপপ্রবাহের সর্তকবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। অবশ্য সপ্তাহের প্রথম থেকেই তেতে উঠেছে দুই জেলা। দুপুরে বাইরে বেরনোই দায়! বেলা গড়াতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার আর বাঁকুড়ার বাতাস আরও গরম হয়ে উঠল রাজনীতির তর্জায়। চাঁদিফাটা গরমে দুই জেলাতেই সভা করে গেলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
পুরুলিয়া শহর থেকে সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে রায়বাঘিনী ময়দানে ছিল নরেন্দ্র মোদীর সভা। তিনি যখন সভার মাঠে পৌঁছন, তখন বাজে পৌনে বারোটা। তার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে থেকে ঠায় দাঁড়িয়েছিল ভিড়। আড়শার বেলডি থাকা আসা অঙ্কিত গড়াই, জয়পুরের মনোজ ভান্ডারিরা বললেন, ‘‘গরম তো পড়বেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ বলে কথা। সেটা ছাড়া যায় নাকি!’’
পুরুলিয়া শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে শিমুলিয়ার কালীপুর ফুটবল ময়দানে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার যখন নামছে, ঘড়ির কাঁটা তখন দেড়টা পেরিয়েছে। হেলিপ্যাডের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে জমাট ভিড়। মাথা, মুখ ভিজিয়ে নিতে জলের ট্যাঙ্কারের লম্বা লাইন পড়েছিল। বাচ্চাদের হাতে আইসক্রিম। কেউ পাউচের জলে গলা ভিজিয়ে নিচ্ছেন। হুড়া থেকে আসা কালীপদ মাহাতো বলেন, ‘‘ভীষণ গরম। এর মধ্যে বুধবার লধুড়কার সভাতেও গিয়েছিলাম।’’ বক্তৃতায় মমতাও বলেন, ‘‘এই জেলাগুলিতে ভোট আগে হয়ে যায়। নরেন্দ্র মোদী নিজে যাতে সময় করে আসতে পারে, সে জন্য ভোটে দেরি করিয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন কমলাডাঙায় নরেন্দ্র মোদী ও দুপুরে বাঁকুড়ার তামলিবাঁধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেন। জেলা আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এ দিন বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার পরেও দু’টি সভার ভিড় অক্সিজেন দিয়েছে প্রার্থীদের। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সাধারন সম্পাদক সৌগত পাত্র বলেন, “রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয় এমন বহু মানুষও এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এসেছিলেন।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “আমরা যতটা ভিড় আশা করেছিলাম তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি মানুষ এসেছিলেন।” সভা মঞ্চে এসেই মমতা নির্দেশ দেন মানুষজনকে মঞ্চের সামনে ছাউনির নীচে আনতে। তিনি বলেন, “এত গরমে ভোট হওয়া মানে সকলেরই কষ্ট।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁয়ের বক্তব্য, ‘‘এত গরমের মধ্যেও মানুষ সভায় এসে বুঝিয়েছেন তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের সঙ্গেই রয়েছেন।”
সহ-প্রতিবেদন: রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঁকুড়া