জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলিকে এলপিজি-র সংযোগ দিতে উদ্যোগী হল বনদফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বলরামপুর এবং ঝালদার বেশ কিছু গ্রামের বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির দরিদ্র পরিবারগুলি জ্বালানি হিসেবে জঙ্গলের কাঠই ব্যবহার করে। পুরুলিয়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘‘কয়েকশো গ্রামের মানুষ বছরের পর বছর জঙ্গলের কাঠ ব্যবহার করায় জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে। বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি পেলে এই ছবিটা বদলাতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই এই প্রকল্প। প্রতিটি পরিবারের এক জন সদস্যের নামে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।’’
সম্প্রতি বলরামপুরে অযোধ্যা পাহাড় ও পাহাড়তলির লুকুইচাটানি, শালুনি, শিরগি, পারবাইদ, কায়রাডি, বড় চাতরমা, গিদিঘাঁটি, ইচাডি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গ্যাসের সিলিন্ডার ও ওভেন দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ডিএফও উপস্থিত ছিলেন। গ্রামবাসীকে তিনি বলেন, ‘‘জ্বালানি সংগ্রহ করতে আপনাদের রোজ ঘণ্টার পর ঘণ্টা জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে হয়। গ্যাস ব্যবহার করলে যেমন সময় বাঁচবে তেমনই জ্বালানি নিয়ে চিন্তা থাকবে না।’’
তিনি জানান, জঙ্গলের কাছাকাছি গ্রামগুলির বাসিন্দাদের নিয়ে বন সুরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরাই জঙ্গলের দেখভাল করবলেন। বনজ সম্পদ বিক্রির সময়ে আগে ২৫ শতাংশ টাকা ওই কমিটি পেত। এখন পায় ৪০ শতাংশ টাকা। জ্বালানির বিকল্প বন্দোবস্ত হলে জঙ্গল থেকে লাভ আরও বাড়বে। তাতে লাভবান হবে বন সুরক্ষা কমিটিই।
পাহাড়ের লুকুইচাটানি গ্রামের রাইমণি কিস্কু, শুকুরমণি কিস্কু, বাসন্তী টুডুরা বলেন, ‘‘গ্যাস থাকলে বর্ষায় নিশ্চিন্ত থাকা যায়।’’ এই প্রকল্পে গ্রামবাসী উপকৃত হবে বলেই মত বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুদীপ মাহাতোর।
তবে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সতর্কতাও যে দরকার সেই কথা পইপই করে বুঝিয়েছেন ডিএফও।
ফেরার আগে জানিয়ে এসেছেন, গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজে দেখে আসবেন কী ভাবে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করছেন সবাই। সেই সময়ে গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে গ্যাসের উনুনে বানানো চাও খাবেন বলে আগাম বলে রেখেছেন তিনি।