আজ শুরু মাঘীমেলা

৯৬ তম শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসবের সূচনা হবে আজ, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে। যে আদর্শ নিয়ে শ্রীনিকেতন মেলা শুরু হয়েছিল, এত বছর পরেও সেই ধারা বজায় রেখেছে বিশ্বভারতী।

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২১
Share:

মেলায় থাকছে আনাজের প্রদর্শনী। সোমবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

আজ, মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাঘমেলা। যার উদ্বোধন করবেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন। এ বারের উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর। উদ্বোধনের পরে শিল্পসদনের সার্টিফিকেট কোর্স ও শিক্ষাচর্চার নিদর্শনপত্র দেওয়া হবে।

Advertisement

রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের যে দুটি সাধনার কথা নানা ভাবে জানিয়েছেন, তার একটি শান্তিনিকেতন, অন্যটি শ্রীনিকেতন। পল্লি-পুনর্গঠনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কুঠিবাড়িতে শুরু হয়েছিল ‘ইনস্টিটিউট অফ রুরাল রিকনস্ট্রাকশন’-এর কাজ। তৈরি হয় শ্রীনিকেতন। শান্তিনিকেতন থেকে মাইল দু’য়েক দূরে শ্রীনিকেতনেই প্রাণ পেতে থাকল রবীন্দ্রনাথের গ্রামীণ ভাবনা। পরের বছর অর্থাৎ ১৯২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি হল শ্রীনিকেতনের বার্ষিক উৎসব। সেই থেকেই প্রতিবছর ৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীনিকেতনের প্রতিষ্ঠা দিবসে শুরু হয় শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসব। যা মাঘমেলা কিংবা গ্রামীণ এলাকায় কুঠির মেলা নামে পরিচিত।

৯৬ তম শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসবের সূচনা হবে আজ, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে। যে আদর্শ নিয়ে শ্রীনিকেতন মেলা শুরু হয়েছিল, এত বছর পরেও সেই ধারা বজায় রেখেছে বিশ্বভারতী। গ্রামীণ মেলা, তাই পৌষমেলার মতো নিরাপত্তায় আগাগোড়া মুড়ে রাখার প্রয়োজন পড়ে না এই মেলাকে। মেলাতে ঢুকলেই দেখা যাবে চারদিকে দোকান। আর ঠিক মাঝখানে অনুষ্ঠান মঞ্চ। সেখানেই তিন দিন ধরে হবে নানা অনুষ্ঠান। যেমন যাত্রা, বাউল ও সুফিদের আসর, কীর্তন, ভাদু, টুসু, ঘেটু, ভাঁজো। আর দেখা যাবে নাগরদোলা, হরেক মালের দোকান, খাবারের দোকান আর সার সার বসে থাকা কাঠ, পুঁথি, ডোকরা শিল্পীদের। সাধারণের মধ্যেও অসাধারণত্ব বজায় রেখেছে এই মেলা।

Advertisement

এ ছাড়াও দর্শকদের যা আকৃষ্ট করে তা হল আনাজ প্রদর্শনী। এ বার পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ এলাকা শ্রীচন্দ্রপুর, সালোন থেকে ইউসুফ মণ্ডল, আশুতোষ বিশ্বাসরা নিয়ে এসেছেন পাঁচ কেজির মূলো কিংবা বিশাল আকৃতির সর্ষে ঝাড়। থাকে পালংশাক, তিসি, সূর্যমুখী, আমআদাও। এই দেখতেই মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। মেলার বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন অংশে রয়েছে যুব সমাবেশ, শিশু প্রদর্শনী, গ্রামীণ কবি ও সাহিত্যিক সম্মেলন এবং নৃত্যানুষ্ঠান।

পৌষমেলায় দূষণ নিয়ে এ বার ছিল বাড়তি সতর্কতা। এই প্রথমবার মেলা যেমন ছ’দিনের হয়েছে, ঠিক তেমনই মেলা থেকে বাদ পড়েছে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী বাজি পোড়ানো। প্রথা অনুযায়ী, শ্রীনিকেতন মেলার দ্বিতীয় দিন বাজি পোড়ানো হয়। তবে এ বছর এই মেলায় বাজি পোড়ানো নিয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা নেই। কর্তৃপক্ষ সূত্রেও জানা যায়নি কিছুই। সকলেই অপেক্ষা করছেন আগামীকাল কী হয় দেখতে।

মাঘমেলা প্রসঙ্গে কর্মী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক জয়দেব সরকার বলেন, ‘‘যে আদর্শ নিয়ে কবিগুরু শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেটাই এখনও বজায় রাখা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন