সতর্ক: মিটিং চলার সময়ে বিদ্যুতের গোলমাল আটকাতে বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনের সামনে বসানো হচ্ছে দু’টি ট্রান্সফর্মার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
জেলায় এসে একশোটিরও বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আজ বুধবার, দুপুরে বাঁকুড়ার শালতোড়ার কলেজ মাঠে প্রশাসনিক সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। বিকেলে বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে প্রশাসনিক বৈঠক হওয়ার কথা তাঁর। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূচি সেরে রাতে বাঁকুড়ায় থাকতে পারেন তিনি। বৃহস্পতিবার তিনি পশ্চিম বর্ধমানে যাবেন।
এ বারের মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন জেলার চাষিরা। ঘটনা হল, চলতি বছরে বৃষ্টির ঘাটতির জেরে কৃষি দফতরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান চাষ হয়নি। যে পরিমাণ ধান জমিতে লাগানো হয়েছিল তার অনেকটাই বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে। জেলায় এসে ধান চাষের হাল সরেজমিনে দেখে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। জেলার সার্বিক পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জেলা প্রশাসনও ধান চাষের অবস্থার সার্বিক রিপোর্ট তৈরি করেছে। মুখ্যমন্ত্রীও মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় এ নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। এ বার বাঁকুড়ার চাষিদের জন্য তিনি কোনও সুখবর দেন, কি না, সে দিকেই নজর জেলার কৃষকদের।
কৃষকসভার জেলা সম্পাদক যদুনাথ রায়ের অভিযোগ, “এক দিকে বৃষ্টি কম হয়েছে, আবার কংসাবতী বা ডিভিসিও ঠিক সময়ে জল না ছাড়ায় জেলার বেশির ভাগ এলাকার ধান মাঠেই শুকিয়ে গিয়েছে। যা পরিস্থিতি জেলায় এ বার ধানের ফলন অর্ধেকেরও কম হবে বলে আশঙ্কা করছি। আমরা জেলাশাসকের কাছে আগেই খরা ঘোষণার দাবি তুলেছি। এখনও সেই দাবি তুলছি।”
জেলার চাষের সার্বিক পরিস্থিতি প্রশাসনের নজরে রয়েছে জানিয়ে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “জেলায় ধান চাষের কী পরিস্থিতি তার সার্বিক রিপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে সেই রিপোর্ট দেব। যে সব এলাকায় ধান চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেখানে বিকল্প হিসেবে ডালশস্য ও তৈলবীজ চাষের উদ্যোগও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।” জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কিছু বার্তা দেবেন কি না, তা অবশ্য নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি প্রশাসনিক মহল সূত্রে।
বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস জানান, এ বারের জেলা সফরে এসে বাঁকুড়া জেলার জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস ও প্রায় ২৯০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভার যাবতীয় প্রস্তুতি সারা হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শালতোড়া ঝিলের নবরূপদান, বাঁকুড়া মেডিক্যালে একটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, জেলায় ১৬টি নতুন রুটে সরকারি বাস পরিষেবা চালু করা-সহ কংসাবতী সেচ বিভাগের বেশ কিছু খাল সংস্কার ও নতুন চেকড্যাম গড়ার প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ গুলি ছাড়াও বেশ কিছু রাস্তা, জয়রামবাটিতে ডরর্মিটরি, বিষ্ণুপুর পুরসভার একটি শ্মশানে ইলেকট্রিক চুল্লিরও উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
এ ছাড়া বাঁকুড়া মেডিক্যালে রোগীর আত্মীয়দের অপেক্ষাকেন্দ্র, বেলিয়াতোড় ও রামসাগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সংক্রামক রোগীদের জন্য বিশেষ কক্ষ, ওন্দা স্টেডিয়াম গড়ার প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের শিলান্যাস করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সফরে নিরাপত্তার জন্য কড়া পুলিশি ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।”