—প্রতীকী চিত্র।
নেশার টাকা না পেয়ে নবম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলের সামনে শ্বশুরবাড়িতেই স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যায় নলহাটির সাত নম্বর ওয়ার্ডের নাপিত পাড়ায়। আর্ত-চিৎকার শুনে পাড়ার লোকজন রিনা লেটকে (৩০) প্রথমে নলহাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করান। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে রামপুরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার সেখানেই রিনার মৃত্যু হয়। বুধবার জামাই ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে নলহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রিনার মা মনসা সরকার। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা। পুলিশ তাদের ধরতে তল্লাশি শুরু করেছে।
পড়শি, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, নেশা করা নিয়ে পরিবারে প্রত্যেক দিনই অশান্তি হত। সোমবার অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। পড়শিদের অনুমান, তার পরেই এই ঘটনা। পুলিশ জেনেছে, বছর পনেরো আগে নলহাটির সাহু পাড়ার বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রি সুখচাঁদ লেট-এর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রিনার। বিয়ের পর থেকে নেশা নিয়ে অশান্তি লেগে ছিল। সুখচাঁদ কাজের সূত্রে বাইরে থাকত। পড়শিদের কারও দাবি, সংসার খরচের কোনও টাকা বাড়িতে পাঠাত না। বহু কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করাতেন রিনাদেবী। এ দিকে, কাজ থেকে বাড়ি ফিরলে ফের নেশার জন্য বউয়ের উপরে অত্যাচার করত।
রিনার-মা মনসাদেবী দাবি, “শ্বশুর বাড়িতে অত্যাচারের কারণে মেয়েকে নিজের ঘরে এনে রেখেছিলাম। জামাইও আমাদের কাছে থাকত। সোমবার চিকিৎসার জন্য কলকাতা গিয়েছিলাম। পরে এসে শুনি, জামাই নেশার জন্য মেয়ের কাছে টাকা চায়। মেয়ে দিতে অস্বীকার করলে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।” মনসাদেবীর দাবি, সবই হয়েছে নবম শ্রেণির পড়ুয়া নাতির সামনে। পুলিশের কাছে সে সব লিখিত ভাবে জানিয়েছেন মনসাদেবী। তাঁর আরও দাবি, ‘‘ঘরে অপারেশনের এক লক্ষ টাকা ছিল। সেই টাকাটুকুও নিয়ে জামাই চম্পট দিয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, নেশার কারণে স্ত্রীকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে অভিযুক্তেরা পলাতক। সাহু পাড়ার বাড়িতে গিয়ে পুলিশ কারোরই দেখা পায়নি।