শিশুকে ধর্ষণ করে খুনে ফাঁসির সাজা

বছর পাঁচেকের ভাইঝিকে ধর্ষণ করে খুনের দায়ে এক যুবককে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। মামলায় সরকারি আইনজীবী সৈয়দ সমিদুল আলম জানান, বোলপুর থানা এলাকার ডিসেম্বরের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৭
Share:

ফাঁসির সাজা শুনে বেরিয়ে আসছেন সুফল টুডু। —নিজস্ব চিত্র

বছর পাঁচেকের ভাইঝিকে ধর্ষণ করে খুনের দায়ে এক যুবককে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। মামলায় সরকারি আইনজীবী সৈয়দ সমিদুল আলম জানান, বোলপুর থানা এলাকার ডিসেম্বরের ঘটনা। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সাজা শোনান সিউড়ির দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা তথা বিশেষ আদালতের বিচারক মাহানন্দ দাস। সাজাপ্রাপ্তের নাম সুফল টুডু। বাড়ি বোলপুরের সিয়ান মোল্লাডাঙায়।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী জানান, গত ডিসেম্বরের ১১ তারিখ বিকালে বাড়ির বাইরে খেলছিল বছর পাঁচেকের ওই শিশু। মায়ের সামনেই শিশুটিকে কোলে নিয়ে বেড়াতে চলে যায় কাকা সুফল। সন্ধ্যা নামলেও মেয়ে ঘরে না আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন মেয়েটির মা। মেয়ে কোথায়? দেওরকে সে প্রশ্ন করলেও সদুত্তর মেলেনি। রাত পার হয়ে এলেও মেয়েকে না পেয়ে সুফলের উপরই সকলের সন্দেহ হয়। তখনই সকলে চেপে ধরেন সুফলকে। প্রথমটায় সব অস্বীকার করলেও শেষে মুখ খোলে সুফল। তার কথা মতো বাড়ির অদূরে ধানকল লাগোয়া নর্দমায় বিবস্ত্র, রক্তাক্ত ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবার। সেখান থেকে তাকে প্রথমে বোলপুরের সিয়ান মহকুমা হাসপাতাল, পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। একদিন পরে মৃত্যু হয় শিশুটির।

সে দিনই বোলপুর থানায় দেওর সুফলের টুডুর বিরুদ্ধে মেয়ের উপরে যৌন নিগ্রহ ও তাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন শিুশুকন্যার মা। পুলিশ দ্রুত চার্জশিট পেশ করে। শিশুর যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ (পস্কো) আইনেও অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলারই বিচার চলছিল এত দিন। শিশুর মা-বাবা, প্রতিবেশী, দুটি হাসপাতালের চিকিৎসক মিলিয়ে আট জনের সাক্ষ্য প্রমাণ থেকে সোমবারই ওই আদিবাসী যুবককে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। সামিদুল আলম বলেন, ‘‘অভিযুক্তের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সুফলের বাবা। কিন্তু সেটাও অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই যায়।’’

Advertisement

সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘সাক্ষীদের কথা শুনে প্রতি মূহূর্তে শিউরে উঠেছি। কী নৃশংসতা!’’ নিজের ভাইঝির উপরে অমানুষিক অত্যাচারেই কারণেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনান বিচারক, জানাচ্ছেন সরকারি কৌঁসুলি।

এ দিকে, রায় শুনে শিশুটির মা বলছেন, ‘‘মেয়েটা তো আর ফিরবে না। তবু শয়তানটা সাজা পাবে জেনে শান্তি পাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন