Causeway submerged in water

বহু কজ়ওয়ে ডুবে, ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

জেলার বিভিন্ন রাস্তার কজ়ওয়ে ডুবে যাওয়ায় পরিবহণ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে। ঝালদা ১ ব্লকের ঝালদা-খামার রাস্তায় শালদহ নদীর কজ়ওয়ে ডুবে থাকায় যাতায়াত বন্ধ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৯
Share:

তিন দিন ধরেই বরাবাজার থেকে মানবাজার রাজ্য সড়কের নৈংসাই নদীর কজওয়ের উপর দিয়ে বইছে জল। ঝুকি নিয়ে চলছে পারাপার। পের করে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রীদের। বরাবাজারে।ছবি- রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।

নিম্নচাপের বৃষ্টিতে পুরুলিয়া জেলার বেশ কয়েকটি কজ়ওয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তবে সময় মতো বাসিন্দারা সরে যাওয়ায় রক্ষা পেয়েছেন। বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে কিছু এলাকা।

Advertisement

জেলার বিভিন্ন রাস্তার কজ়ওয়ে ডুবে যাওয়ায় পরিবহণ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে। ঝালদা ১ ব্লকের ঝালদা-খামার রাস্তায় শালদহ নদীর কজ়ওয়ে ডুবে থাকায় যাতায়াত বন্ধ। মানবাজার ২ ব্লকের আঁকরো-রঘুনাথপুর রাস্তায় টটকো নদীর উপর কজ়ওয়ে এবং বোরো-জয়পুর রাস্তায় একই নদীর উপরে কজ়ওয়েও ছিল জলের তলায়। বরাবাজার-মানবাজার রাস্তায় নেংসাই নদীর কজ়ওয়ে ডুবে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের শাঁকারি হয়ে ঘুরপথে ব্লক সদর বরাবাজারে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বান্দোয়ান-দুয়ারসিনি রাস্তায় গুঁদলুবেড়া গ্রামের অদূরে একটি কজ়ওয়ে জলমগ্ন থাকায় এই রাস্তাতেও এ দিন যাতায়াত
ব্যাহত হয়।

একই ভাবে হুড়ার দলদলি-কেশরগড় রাস্তায় পাতলই নদীর উপরে কজ়ওয়ে এবং ঝালদা-বেগুনকোদর রাস্তায় সাহারজোড় কজ়ওয়ে জলের তলায় থাকায় এই পথেও যাতায়াত সহ যান চলাচল ব্যাহত হয়।

Advertisement

রাখবড়-বেগুনকোদর রাস্তায় কচাহাতুর কাছে কংসাবতীর উপরে একটি সেতুর অবস্থা নড়বড়ে থাকায় ওই পথে যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ঝালদা ২ ব্লকের বিডিও অঙ্কিতা উপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঝুঁকি এড়াতে এই সেতু দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

অযোধ্যাপাহাড়ে বৃষ্টির জেরে বান্দু নদীতে জল বাড়ায় জলের তোড়ে শিরকাবাদ-নুনিয়া রাস্তায় ভেলাইডি সেতুর একদিকের সংযোগকারী রাস্তা ধুয়ে গিয়েছে। এই ব্লকেরই পাহাড়তলির শিরকাবাদ বন দফতর সংলগ্ন এলাকা থেকে পাটটাঁড় পর্যন্ত আর একটি কংক্রিটের রাস্তার তলার মাটি জলের তোড়ে ধুয়ে যাওয়ায় রাস্তাটি ভেঙে পড়েছে। আড়শার বিডিও শঙ্খ ঘটক জানান, প্রবল বৃষ্টির জেরেই এই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বালির বস্তা ফেলে আপাতত মেরামত করার চেষ্টা চলছে।

রঘুনাথপুর ১ ব্লকের শাঁকা গ্রামে চারটি, খাজুরা গ্রামে দু’টি ও বেড়ো গ্রামে একটি কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়েছে। বেড়োতে এ দিন সকালে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ায় আহত হন এক মহিলা। শাঁকার বাসিন্দা শ্যামাপদ বাউরি, আস্তিক বাউরির কথায়, ‘‘রাতে বৃষ্টির মধ্যে আচমকা কিছু পড়ার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। দেওয়াল থেকে ইট খসে পড়ছে বোঝার পরেই আতঙ্কে বেরিয়ে আসি। কিছুক্ষণ পরে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ে।’’ ওই গ্রামে রাতেই কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় লাগোয়া চারটি বাড়ি আংশিক ভাবে ভেঙে পড়ে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রূপম বাউরি জানান, খবর পেয়ে তাঁরা সেখানে যান। তাঁরা পরিবারগুলির পাশে রয়েছেন। ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে কোনও পরিবারকে নিরাপদ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।

কাশীপুর ব্লকে বেকো ও আগরডি পঞ্চায়েতের চারটি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাঁদের শিবিরে স্থানান্তর করতে হয়নি।

টানা বৃষ্টিতে ঝালদা ১ ব্লকের মাড়ু-মসিনা পঞ্চায়েতের খাটজুড়ি গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে ইলু-জারগো, পুস্তি, হেঁসাহাতু ও মাঠারি-খামার পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রাম। পুস্তি পঞ্চায়েতের ভাকুয়াডি গ্রামের বাসিন্দা বিনয় মাহাতো বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বেশিক্ষণ থাকছে না। খুব সমস্যায় রয়েছি।’’

বিদ্যুৎ দফতরের ঝালদার স্টেশন ম্যানেজার মহম্মদ নঈম বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরেই পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের কর্মীরা এই পরিস্থিতিতেও পরিষেবা সচল রাখতে কাজ করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন