100 days Work

একশো দিনের কাজ নেই বহু বছর, দাবি

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের লায়েকপাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, ‘লকডাউন’-এর জেরে তাঁদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে। একশো দিনের কাজ মিললে, কিছুটা স্বস্তি পেতেন।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ অধিকারী 

বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৭:১৬
Share:

অধিকাংশই ২০১২ সালের পরে কাজ পাননি বলে অভিযোগ। এখন শালপাতা বিক্রি করছেন অর্ধেক দামে। বিষ্ণুপুরের মড়ারের লায়েকপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সমীক্ষায় ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজ কার্যকরী করার নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষে ছিল বাঁকুড়া। সে জেলাতেই এমন গ্রাম রয়েছে যেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের অনেকে শেষ বার একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন আট বছর আগে।

Advertisement

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের লায়েকপাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, ‘লকডাউন’-এর জেরে তাঁদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে। একশো দিনের কাজ মিললে, কিছুটা স্বস্তি পেতেন।

সংশ্লিষ্ট মড়ার পঞ্চায়েতের সদস্যা তৃণমূলের শিখা ধীবর মেনেছেন সমস্যার কথা।

Advertisement

তবে বাঁকুড়া জেলার একশো দিনের কাজের প্রকল্প আধিকারিক জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এত দীর্ঘ দিন ওই এলাকার মানুষ কাজ পাননি, এমন তথ্য আমার কাছে নেই৷ এমন হয়ে থাকলে, দ্রুত কাজ দেওয়ার জন্য যা করার, করব।’’

লায়েকপাড়ায় ৪৫টি পরিবারের বাস। তাঁদের একটা বড় অংশের জীবিকা লাগোয়া বাসুদেবপুরের জঙ্গল থেকে শালপাতা কুড়িয়ে থালা বানানো। সারাদিনে ৫০০ শালপাতা সেলাই করে থালা বানিয়ে শ’খানেক টাকা রোজগার। কিন্তু ‘লকডাউন’-এ সে থালার চাহিদা নেই। তাই তা-ও জুটছে না। অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে শালপাতা।

লায়েকপাড়ার বাসিন্দা হরিপদ লায়েক, গোপাল লায়েকরা জানান, তাঁরা রেশন পেয়েছেন। তবে জব-কার্ড বার করে দেখান, একশো দিনের প্রকল্পে শেষ কাজ পেয়েছেন ২০১২ সালে। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এ সময় কাজ পেলে হাতে ক’টা টাকা থাকত। একটু স্বস্তি পেতাম।’’ এলাকাবাসী সুকুমার সর্দারের অভিযোগ, “এলাকার কয়েকজন ২০১৫ সালে ছ’দিন কাজ পেয়েছিলেন। তবে অধিকাংশই শেষ কাজ পেয়েছেন ২০১২ সালে।’’

মড়ার পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্যা শিখা ধীবর বলেন, ‘‘কয়েক বছর লায়েকপাড়ার বাসিন্দারা একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পাননি। খুবই কষ্টে আছেন ওঁরা।’’ কেন কাজ মিলল না? পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অরুণ বিশ্বাস বলেন, “ওই এলাকায় কাজ করার মতো সরকারি জায়গা নেই। তা ছাড়া, ওই এলাকার মানুষ হয়তো ৪-ক ফর্ম পূরণ করে কাজের আবেদন করেননি। খোঁজ নিচ্ছি।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের প্রকল্পে কাজ চাইতে হলে ৪-ক ফর্মে আবেদন করতে হয়। আবেদনকারীর কাজ পাওয়ার কথা আবেদন জমা দেওয়ার পনেরো দিনের মধ্যে। কিন্তু লায়েকপাড়ার বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি, ওই ফর্ম পূরণ করে আবেদনের বিষয়টি তাঁরা জানেন না। স্থানীয় বিজেপি নেতা বিমল ঘরামির ক্ষোভ, ‘‘মানুষকে সচেতন করেনি পঞ্চায়েত।’’ বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত বলেন, “এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন