উৎপাদন বন্ধের নোটিস ঝুলল

ওই কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এগারো বছর ধরে ঘুটগোড়িয়ায় চলতে থাকা ওই কারখানাটিতে চারটি ইউনিট রয়েছে। এ দিন যে ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে রেলের চাবি-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি হতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

উৎসবের মরসুমে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ল শতাধিক শ্রমিকের।

Advertisement

শনিবার সকালে বড়জোড়ার ঘুটগোড়িয়া শিল্পাঞ্চলে রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানার একটি ইউনিটে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ওই ইউনিটে প্রায় ১২০ স্থায়ী কর্মী কাজ করতেন। শোক নেমে এসেছে ওই শ্রমিকদের পরিবারে।

ওই কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এগারো বছর ধরে ঘুটগোড়িয়ায় চলতে থাকা ওই কারখানাটিতে চারটি ইউনিট রয়েছে। এ দিন যে ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে রেলের চাবি-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি হতো। ঠিক কী কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ ইউনিটটি বন্ধ করে দিলেন, তা নিয়ে শ্রমিকেরা ধোঁয়াশায়। কারখানার শ্রমিক বড়জোড়ার হরিরামপুরের বাসিন্দা বিধান ঘোষ, কোটালপুরের বাসিন্দা রাজীব দত্তেরা বলেন, “বেতন সময় মতোই পাচ্ছিলাম। পুজোর আগে বোনাসও পেয়েছি। সম্প্রতি শ্রমিকদের চুক্তির নবীকরণও হয়েছে। কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে, এমন কোনও আভাসও পাইনি আমরা।”

Advertisement

তারপরেও কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কারখানার এক আধিকারিক দাবি করেন, “রেলের তরফে যন্ত্রাংশ তৈরির বরাত মাসখানেক হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে বরাত না পাওয়াতেই মালিক পক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” বরাত মিললেই কারখানার বন্ধ ইউনিট ফের চালু করা হবে বলেই মালিক পক্ষ আশ্বাস দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

শ্রমিকেরা জানাচ্ছেন, অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও সকাল সকাল কারখানায় কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন তাঁরা। কারখানার ভিতরে গিয়ে তাঁরা ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেখে তাঁরা মুষড়ে পড়েন। মালিক পক্ষের নির্দেশ মতো কারখানার নিরাপত্তা কর্মীরা শ্রমিকদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র নেওয়া শুরু করে দেন। তাতে অসন্তোষ ছড়ায় শ্রমিকদের মধ্যে। কারখানার দরজার বাইরে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।

ইউনিট বন্ধ হওয়ার খবর পেয়েই কারখানায় যান বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বড়জোড়া ব্লকের শ্রমিক নেতা অলক মুখোপাধ্যায়। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন তিনি। অলকবাবু বলেন, “মালিকপক্ষ শীঘ্রই শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন। উৎসবের মধ্যে শ্রমিকদের জীবনে বড় বিপর্যয় নেমে এসেছে। আমরা দাবি তুলেছি, যত দ্রুত সম্ভব কারখানা চালু করতে হবে।” চেষ্টা করেও কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

বিডিও (বড়জোড়া) পঙ্কজ আচার্য বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। কারখানার ইউনিট বন্ধের ঘটনাটি শুনেছি। ফিরে গিয়েই প্রশাসনিক ভাবে যা করার করব।” বাঁকুড়ার অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার তাপস দত্ত বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষ আগাম কিছু না জানিয়েই এই পদক্ষেপ নিয়েছে। শীঘ্রই সমস্যা মেটাতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন