এক কোটির তোরণের মার্বেল খসল

কয়েক মাস আগে কৌশিকী অমাবস্যার সময় ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল তারাপীঠের তোরণদ্বারের। সেই তোরণ তৈরিতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল প্রায় এক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা। সে সময় আলো দিয়ে সাজানোও হয়েছিল তোরণদ্বার।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

তারাপীঠ শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ১৩:৫০
Share:

সংস্কার: এই সেই তোরণদ্বার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

কয়েক মাস আগে কৌশিকী অমাবস্যার সময় ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল তারাপীঠের তোরণদ্বারের। সেই তোরণ তৈরিতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল প্রায় এক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা। সে সময় আলো দিয়ে সাজানোও হয়েছিল তোরণদ্বার।

Advertisement

ক’টা দিন যেতে না যেতেই তোরণদ্বার থেকে মার্বেল খসে পড়তে শুরু করেছে। সে নিয়ে বিতর্ক শুরুর আগেই অবশ্য সংস্কার শুরু করে দিয়েছে ওই কাজের বরাতপ্রাপ্ত এজেন্সি। কেন এমনটা হল, সে প্রশ্নে ওই এজেন্সিকে শো-কজও করেছে তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ।

পর্ষদের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উমাশঙ্কর এস বলেন, ‘‘তোরনদ্বারটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। এজেন্সিকে সম্পূর্ণ টাকাও এখনও দেওয়া হয়নি।’’ তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলছেন, ‘‘ওই কাজ এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু মার্বেল কেন খসল সে ব্যাপারে এজেন্সিকে শো-কজ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজ ভাল ভাবে শেষ করতেও বলা হয়েছে।’’

Advertisement

তারাপীঠের সৌন্দর্যায়নের জন্য রামপুরহাট-সাঁইথিয়া সড়কে তারাপীঠ ঢোকার আগে উদয়পুর মোড়ে ওই তোরণদ্বার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পটির ঘোষণা করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর কৌশিকী অমাবস্যার সময় তোরণদ্বারটি জনসাধারণের দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়। এমন প্রকল্পেও জোড়াতালি দেওয়া কাজ হয়েছে দেখে শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি’র জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘আসলে টাকা নয়-ছয়ের জন্যেই
এই সব প্রকল্প করা হচ্ছে। এক বার গড়া হচ্ছে, তারপর আবার ভাঙা হচ্ছে।’’

তোরণদ্বার নিয়ে অন্য প্রশ্নও দানা বেঁধেছে। যেখানে তোরণদ্বার রয়েছে, সেই রামপুরহাট-সাঁইথিয়া সড়ক এখন চার লেনের করা হচ্ছে। অথচ তোরণদ্বারটির পরিকল্পনা হয়েছে দুই লেনের রাস্তা ধরে। স্থানীয়দের অনেকের অভিযোগ, সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত ভাবে ওই তোরণদ্বারটি তৈরি করা হয়েছে। প্রবীণ এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওই তোরণদ্বারের জন্যই না দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’’

এটি যে উড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয় নয় তা মানছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উমাশঙ্কর এস। তিনি জানান, তোরণদ্বারটি প্রথম যখন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তখন চার লেনের কোনও অনুমোদন পূর্ত দফতরের কাছে ছিল না। পরে ওই সিদ্ধান্ত হয়। তাঁর কথায়, ‘‘তোরণদ্বারের সংস্কারের পরে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।’’ তখন তো আবার ভাঙতে হবে? অর্থের অপচয়ও হবে। অথচ এর কোনও সদুত্তর মেলেনি প্রশাসনের থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন