মান্ডিতে সরতে নারাজ, বন্ধ হাট

কনকনে ঠান্ডায় মকর সংক্রান্তির ঠিক পরের দিনই সপ্তাহান্তের ছুটির দিনের দুপুরের খাওয়া মুরগি, খাসির মাংস কিংবা মাছ ছাড়াই একপ্রকার সারতে হল কাশীপুর এলাকার বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাশীপুর শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৩
Share:

কনকনে ঠান্ডায় মকর সংক্রান্তির ঠিক পরের দিনই সপ্তাহান্তের ছুটির দিনের দুপুরের খাওয়া মুরগি, খাসির মাংস কিংবা মাছ ছাড়াই একপ্রকার সারতে হল কাশীপুর এলাকার বাসিন্দাদের। এমনকী শীতকালীন সব্জির বাজারও জমিয়ে সারতে পারেননি মানুষজন। সৌজন্যে বাজার স্থানান্তর নিয়ে কাশীপুর বাজারের সব্জি ও মাছ-মাংসের কারবারিদের প্রতিবাদ। তাঁরা দোকান বন্ধ রাখায় রবিবার ফর্দ হাতে নিয়ে ঘুরে কার্যত খালি থলি নিয়েই বাড়ি ফিরলেন গৃহস্থেরা।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়ার বেশির ভাগ কিসান মান্ডির সূচনা করলেও সিংহভাগ এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এ নিয়ে কথা ওঠায় ২৯ ডিসেম্বর পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে নির্দেশ দিয়ে যান, কিসান মান্ডিগুলি ১৫ জানুয়ারির মধ্যে খুলে দিতে হবে। এরপরেই কাশীপুর ব্লক থেকে মাইকে ঘোষণা করা হয়, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কাশীপুর বাজার কিসান মান্ডিতে উঠিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কাশীপুরের প্রাণকেন্দ্র হাটতলা এলাকা থেকে কমবেশি এক কিলোমিটার দূরে কিসান মান্ডিতে বাজার তুলে নিয়ে যেতে নারাজ অনেক ব্যবসায়ীই। তাঁদের আশঙ্কা এতে ব্যবসা মার খাবে। ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রশাসন তাঁদের একদিন বৈঠকে ডাকলেও তাঁদের সমস্যার কথা শুনতেই চাওয়া হয়নি। তারই প্রতিবাদে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার শেষ দিনেই তাঁরা বাজার বন্ধ রাখলেন। এ দিকে বলরামপুরেও এ দিন থেকেই বাজার কিসান মান্ডিতে সরানোর কথা ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না হওয়ায় সেখানে এ দিন মান্ডি খোলেনি।

রবিবার গ্রামীণ এলাকার চাষিরা কাশীপুরের পুরনো বাজারে সব্জি নিয়ে গিয়ে দেখেন, বাজারের দু’টি দরজাই বন্ধ। ব্যবসায়ীরা জানান, যাতে কেউ পুরনো বাজারে দোকান খুলতে না পারেন, সে জন্য এ দিন সকাল থেকে বাজারে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। পুলিশ বাধা দিচ্ছে। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘প্রশাসন তো আমাদের কথা শুনতেই চায়নি। তাই আমরা কয়েকদিন ব্যবসা বন্ধ রেখেছি।’’

Advertisement

তবে কিসান মন্ডিতে এ দিন থেকেই নতুন বাজার চালু হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সেখানে না গেলেও আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা চাষিরা তাঁদের মাঠের সব্জি নিয়ে নতুন বাজারে বিক্রি করেছেন। সকাল থেকে স্থানীয় বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাজার পরিচালনা করেছেন। তবে গুটি কয়েক চাষি ছাড়া এ দিন বাজার ছিল কার্যত ফাঁকা। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আগের বাজারের তুলনায় কিসান মান্ডির বাজার অনেক বড়, পরিকাঠামোও ভাল। দু’-একদিনের মধ্যেই পুরনো বাজার ছেড়ে সব ব্যবসায়ী এখানে চলে আসবেন।’’ তবে বাজারের থলে হাতে বেরোনো এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘এই টানাপড়েনের বিষয়টি রবিবারের আগে মিটে গেলেই ভাল হতো। রবিবারের খাওয়া-দাওয়াটা তা হলে মাঠে মারা যেত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন