পড়ে আছে সব্জিবাজার, রাস্তায় হাট

হাল আমলের কিসান মান্ডি নয়। বেশ কয়েক বছর আগে রাস্তা লাগোয়া হাট সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল বিশাল সব্জিবাজার। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই রাস্তা অবরোধ করেই হাট বসছে ময়ূরেশ্বরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৪
Share:

(বাঁদিকে) তৈরি করেও কাজে লাগানো হল না এই পরিকাঠামো। (ডানদিকে) রাস্তায় যানজট তৈরি করেই বসছে হাট।সোমনাথ মুস্তাফি

হাল আমলের কিসান মান্ডি নয়। বেশ কয়েক বছর আগে রাস্তা লাগোয়া হাট সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল বিশাল সব্জিবাজার। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই রাস্তা অবরোধ করেই হাট বসছে ময়ূরেশ্বরে। এতে নিত্য যানজটে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সব্জিবাজার। অভিযোগ, প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

Advertisement

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরেশ্বর স্কুলমোড়ে সাঁইথিয়া-রামপুরহাট সড়কের দু’দিকে সপ্তাহে রবি এবং বৃহস্পতিবার হাট বসে। এর ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। কারণ ওই রাস্তা দিয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের স্কুল, পঞ্চায়েত অফিস, পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক, থানা যাতায়াত করতে হয়। চলাচল করে বাস, ট্রাক-সহ সমস্ত ধরণের যানবাহন। এর ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই কারণে বহুবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সমস্যা দূর করার জন্য সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় একটি পুকুরের পাড়ে একটি সব্জি বাজার তৈরি করা হয়। অব্যবহারের কারণে সেই সব্জিবাজার এখন ভগ্নস্তূপে পরিণত হতে বসেছে। কারণ কোনও ব্যবসায়ীকেই সেখানে নিয়ে যেতে পারেনি প্রশাসন। এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের, বিশেষত স্কুল পড়ুয়াদের।

স্থানীয় হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র অর্ঘ্য পাত্র, গৌরাঙ্গ শর্মারা জানায়, হাটের জন্য এত যানজট হয় যে সাইকেল ঘাড়ে করে স্কুলে ঢুকতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীনও হতে হয় আমাদের। একই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা রাজকুমার ফুলমালি, মহঃ নুরেন্নবীদেরও। তাঁরা জানান, হাটবারের দিনগুলিতে যানজটে ওই রাস্তায় যাওয়াই যায় না। প্রশাসন একটু নজর দিলেই সমস্যার সমাধান হয়। তাতে হয়তো আমাদের একটু দূরে যেতে হবে। কিন্তু যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

Advertisement

ঘটনা হল, শুধু স্থানীয় বাসিন্দারাই নন, যানজটের কারণে ওই রুটের চালকেরাও অতিষ্ঠ। বাসচালক ওসমান আলি, সুনীল দাসরা জানান, সব্জি ব্যবসায়ীরা রাস্তার ধারে এমনভাবে পসরা সাজান যে বাস চালানোই সমস্যা হয়। কোনও কারণে সব্জি নষ্ট হলেই তখন ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।

কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?

ওই হাটে দীর্ঘদিন ধরে সব্জি বিক্রি করছেন রমজান আলি, পরেশ দাসরা। তাঁরা জানান, আমাদের সব্জিবাজারে বসতে আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা উঠে গেলেই মুদিখানার দোকানদারেরাও সব্জি রাখতে শুরু করবে। তখন কে আর লোকালয়ের বাইরে সব্জিবাজারে আমাদের কাছে সব্জি কিনতে যাবে। তাই আগে প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে হাট সরে গেলে কেউ সেই এলাকায় সব্জি বিক্রি করবে না।

ময়ূরেশ্বর ২ নং ব্লকের বিডিও সৈয়দ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘যানজট ময়ূরেশ্বরের বড়ো সমস্যা। শুধু মাত্র প্রশাসনিক উদ্যোগেই ওই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দেখছি, কী করা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন