বোলপুরে এসডিপিও অফিস থেকে বৈঠক করে বেরিয়ে আসছেন পুলিশ কর্তারা ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
পুরভোটে সন্ত্রাস চালাতে পারে শাসকদল, এই আশঙ্কা সব বিরোধী রাজনৈতিক দলেরই। বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসের তরফে জেলার চারটি পুরভোটের প্রচারে যে সব হাইপ্রাফাইল নেতারা এসেছেন, তাঁরাও একই কথা বলছেন। এমনকী, জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের একাংশও আড়ালে মানছেন, এ বার পুরভোটে অশান্তি হতে পারে। আর সে কথা মাথায় রেখেই স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা বাড়ল জেলায়।
জেলা প্রশাসনের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সর্ব শেষ যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে জেলার চার পুরসভা মিলিয়ে মোট ২২৬টি বুথের মধ্যে ১২৫টি অর্থাৎ অর্ধেক বুথকেই স্পর্শকাতর দেখানো হয়েছে। যদিও স্পর্শকাতর, অতি স্পর্শকাতর, কম স্পর্শকাতর— এই তিনটি ভাগে বুথগুলিকে ভাগ করা হয়েছে। তবে অর্ধেকেরও বেশি বুথকে স্পর্শকাতর চিহ্নিত করার মধ্যেই জেলা প্রশাসনের আশঙ্কার প্রমাণ রয়েছে। বিজেপি-র জেলা আহ্বায়ক অর্জুন সাহা বলছেন, ‘‘ভোটের দিন শাসকদল সব রকম ভাবে সন্ত্রাস চালানোর চেষ্টা করবে। বিরোধী ভোটারদের মনে ভয় জাগানোর নানা পন্থা নেবে। আমরা এই জেলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট না হওয়ার আশঙ্কা যে এমনি এমনিই করছি না, তা প্রশাসনের তালিকাতেই প্রমাণ হয়ে যায়।’’ পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করলে তৃণমূলের সন্ত্রাস রোখা যাবে বলেই তাঁর দাবি। সন্ত্রাস নিয়ে বিরোধীদের আশঙ্কাকে অবশ্য ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রশাসন সূত্রের খবর, স্পর্শকাতর বুথগুলির মধ্যে সিউড়ি পুরসভায় ৩৫, বোলপুরে ৪৮, সাঁইথিয়ায় ২৯ এবং রামপুরহাটে ১৩টি বুথ রয়েছে। রামপুরহাট পুরসভায় স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা কম হলেও সব ক’টিকেই আবার অতি স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে, প্রশাসনেরই অন্য একটি সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে অবজার্ভারের বৈঠকের পর তথ্যে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে, এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে তাতে ২২৬টি বুথে চার জন করে ভোটকর্মী মিলিয়ে ৯০৪ জন থাকছেন। এ ছাড়াও ২০ শতাংশ ভোট কর্মী রিজার্ভে থাকছেন বলে জানা গিয়েছে।
এ দিকে, জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, বুথে বুথে পুলিশ কর্মী মোতায়েন চিত্রটাও ছকে ফেলা হয়েছে। ঠিক হয়েছে একটি বুথযুক্ত চত্বরে থাকছেন দুই সশস্ত্র পুলিশকর্মী। দু’টি বুথযুক্ত চত্বরে থাকছে দুই সশস্ত্র পুলিশ কর্মী এবং দু’জন লাঠিধারী এনভিএফ বা হোমগার্ড। তিনটি বুথযুক্ত চত্বরের জন্য লাঠিধারী হোমগার্ডের সংখ্যা এক জন বেশি হবে। কিন্তু, যদি চার বুথযুক্ত চত্বর হয়, সেখানে এক জন এসআই বা এএসআই পদমর্যাদার আধিকারিক, চার জন সশস্ত্র পুলিশ কর্মী এবং চার জন লাঠিধারী হোমগার্ড থাকবে। পাঁচ বুথযুক্ত চত্বর হলে লাঠিধারির সংখ্যা এক জন বাড়বে। এ ছাড়া সেক্টর, আরটি মোবাইল, নাকা চেকিং এবং রিজার্ভের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশকর্মীও থাকছে বলে জেলার এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন।