গাড়িতে পুলিশের স্টিকার ব্যবহার করে ডাকাতির অভিযোগ উঠল এক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের বিরুদ্ধে।
মুরারই থানার নরোত্তমপুরের ঘটনাটি বুধবার রাতের। তবে, ওই ঘটনায় রবিবারই মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সদস্য আব্দুল ওদুদের ওরফে মন্টু প্রধান-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। এসডিপিও (রামপুরহাট) সৈয়দ মহম্মদ মামদাবুল হাসান বলেন, ‘‘অভিযুক্ত আব্দুল ওদুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। একটি গাড়িও আটক হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে।’’
অভিযোগকারী নরোত্তমপুরের বাসিন্দা নগেন ভুঁইমালি পেশায় মুম্বাইয়ে একটি সোনার দোকানে কাজ করেন। সম্প্রতি তিনি ছুটি নিয়ে মুম্বই থেকে বাঢড়ি ফিরেছিলেন। নগেনবাবুর অভিযোগ, গত বুধবার রাতে তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে পাঁচ সশস্ত্র দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তাঁর দাবি, ‘‘ওরা আমাকে অস্ত্র দেখিয়ে ঘরে থাকা মুম্বই থেকে আনা সোনা বের করে দিতে বলে। ওই দুষ্কৃতীদের সোনা না থাকার কথা বলতেই ওরা জোর করে আমার কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা আদায় করে। সেখান থেকে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রাম সংলগ্ন শিবনারায়ণপুর গ্রামে আব্দুল ওদুদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড মারধর করে। পরে রাস্তায় ছেড়ে দেয়।’’ এর পরে তিনি ঘটনার কথা এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের জানান। তাঁর দাবি, মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়ার জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছে।
এ দিকে, গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুরারই ২ ব্লক সভাপতি আফতাবউদ্দিন মল্লিকের দাবি, ‘‘মন্টু আমাদের দলের সঙ্গে ৩৫ বছর ধরে যুক্ত। ওই একই সময় ধরে ও এলাকার জনপ্রতিনিধিও। তৃণমূলের রাজনীতির মান এতটাই নেমে গিয়েছে যে তাঁকে চক্রান্ত করে ডাকাতির মামলায় ফাঁসাচ্ছে।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, মন্টুর নেতৃত্বে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের অনুগামী তথা আমডোল পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানকে অনাস্থা ডেকে সরানো হয়েছিল। তার বদলা নিতেই এটা করা হয়েছে। আব্দুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএমের আলি রেজাও। তিনি বলছেন, ‘‘আব্দুল ওদুদ সমিতির বিরোধী দলনেতা। দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। উনি নোংরা রাজনীতির শিকার। চক্রান্ত করে ওঁকে ফাঁসানো হয়েছে।’’
কংগ্রেস-সিপিএমের বক্তব্য মানতে নারাজ তৃণমূল। দলের মুরারই ২ ব্লক সভাপতি আবু বাক্কার শেখ বলেন, ‘‘এক জনের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতদল অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়ে উঠেছিল। সেই থেকেই মানুষের মনে একটা সন্দেহ জেগেছে। সেই সন্দেহ থেকেই আব্দুল ওদুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। ঠিক কী ঘটেছে, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। এর মধ্যে রাজনীতির তো কিছু নেই।’’