জীবিকার সন্ধানে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানার পারগাঁ গ্রাম থেকে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন গোপালচন্দ্র সিংহ। দিল্লির গুরুগ্রাম এলাকা থেকে এক দিন হঠাৎ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। সেটা আজ থেকে ন’বছর আগের কথা। রবিবার গোপাল ভাইয়ের সঙ্গে ফিরে গেলেন বাড়ি। পুরুলিয়া থেকে।
পুরুলিয়ার ভবঘুরেদের আশ্রম ‘আপনা ঘর’-এর সদস্য রাজেশ সারাওগির কথায়, ‘‘ন’বছর আগে এই ব্যক্তি রাজস্থানের ভরতপুরে আমাদের আশ্রমে আসেন। কী ভাবে এসেছিলেন সেটা আর জানা যায়নি। ঠিকানাও বলতে পারছিলেন না। নাম বলছিলেন। পদবি বলতে পারছিলেন না।’’ কয়েক মাস আগে পুরুলিয়ায় আশ্রমের শাখা তৈরি হয়। গোপাল বাংলায় কথা বলেন দেখে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল এখানে। হিমাংশু পরামাণিক নামে আশ্রমের এক কর্মী তাঁর সঙ্গে কথা বলে ঠিকানা খুঁজে বের করেন। খবর যায় উত্তর দিনাজপুরে, গোপালের বাড়িতে।
দাদা এখনও বেঁচে! —দিন দুয়েক আগে খবরটা পেয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন গোপালের ভাই শ্যামল সিংহ। তিনি এবং কয়েক জন পড়শি করণদিঘি থেকে রবিবার পুরুলিয়ায় দাদাকে নিতে এসেছিলেন। তিনি জানান, তাঁদের গ্রামের কয়েক জন দিল্লিতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। গোপাল তাঁদের সঙ্গেই গিয়েছিলেন। কাজও শুরু করেছিলেন। শ্যামল বলেন, ‘‘একটু মানসিক সমস্যা ছিল। তবে ডাক্তার দেখিয়ে যাওয়ার আগে সেরেও উঠেছিল।’’ গোপাল যখন নিরুদ্দেশ হন, তখন তাঁর মেয়ের বয়স সবে এক বছর পেরিয়েছে। শ্যামল জানান, খবরটা পাওয়ার পরে অনেক খুঁজেছেন দাদাকে। মিসিং ডায়েরি করেছেন থানায়। একটা সময়ে ক্রমশ ফুরিয়ে আসছিল আশা।
আশ্রমের সদস্য সত্যদাস কুণ্ডু জানান, আশ্রমের সবাইকে মিষ্টিমুখ করিয়ে বাড়ি ফিরেছেন গোপাল। আর যাওয়ার আগে বলছেন, ‘‘মেয়েটাকে দেখতে বড্ড ইচ্ছে করছে। আমিই নাম রেখেছিলাম। সৃষ্টি। এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে নিশ্চয়!’’