প্রতীকী ছবি।
দীপক ঘোষ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। অভিযোগ, ইট-পাটকেল ছুড়ে অভিযুক্তকে পুলিশকর্মীদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ইটের ঘায়ে জখম হন দুই পুলিশকর্মী। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে কাঁকরতলা থানার সাহাপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়রাশোল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দীপক ঘোষ খুনের তদন্তে উঠে এসেছিল সাহাপুর গ্রামের দুই যুবকের নাম। তাঁদের খোঁজেই এ দিন খয়রাশোল, কাঁকরতলা ও লোকপুর থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। পুলিশের অভিযোগ, সাহাপুর ডাঙ্গালপাড়া থেকে এক জনকে ধরে গাড়িতে তোলার আগেই পুলিশকে ঘিরে ধরে ইটবৃষ্টি শুরু করেন কয়েক জন গ্রামবাসী। নিজেদের বাঁচাতে যখন পুলিশকর্মীরা ব্যস্ত, সেই সুযোগেই পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) তন্ময় সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘শুধু দীপক ঘোষের খুনে অভিযুক্ত নয়, নানা অপরাধে যুক্তদের খোঁজে ওই গ্রামে অভিযান চালানো হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা ইট পাটকেল ছুঁড়ে তাতে বাধা সৃষ্টি করে। জখম হন এক জন এসআই ও এক কনস্টেবল।’’ তিনি জানান, এ দিন বিকেল থেকে আরও বড় বাহিনী নিয়ে ফের ওই গ্রামে অভিযান চলছে।
এলাকাবাসীর একাংশ জানান, পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নেওয়া বা গ্রামে পুলিশ ঢুকতে বাধা দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয় খয়রাশোলের কাঁকরতলা থানা এলাকায়। এর আগেও পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া, গুলি চালানো থেকে ইটপাটকেল ছোড়ার মতো ঘটনা একাধিক বার ঘটেছে। সাহাপুর গ্রামেই পুলিশকে আক্রমণ করার ঘটনা ঘটেছিল ২০১৩ সালের প্রথম দিকে। অবৈধ কয়লা মজুত রয়েছে, এমন খবর পেয়ে অভিযানে গিয়েছিলেন ৫০-৬০ জন পুলিশকর্মী। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে সে বার জখম হয়েছিলেন ১৬ জন পুলিশকর্মী। ইটের ঘায়ে কাচ ভেঙেছিল পুলিশ ভ্যানেরও। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পিছু হটতে হয় পুলিশকে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, যে গ্রামের অতীত রেকর্ড এমন, সেখানে অবৈধ কয়লার কারবার রয়েছে বলে অভিযোগ, সেখানে অভিযানের সময় কেন আরও সতর্ক ছিল না পুলিশ?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সময়ে অভিযান চালানো হয়েছিল, সেই সময় এমন আক্রমণ হতে পারে বলে ধারণা ছিল না। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, যাদের খোঁজে এ দিন ওই গ্রামে গিয়েছিল পুলিশ, তারা এলাকায় নিহত নেতার বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্য বলেই পরিচিত। তৃণমূলের ওই গোষ্ঠীর প্রতি সেই গ্রামের অনেকের সমর্থন থাকার জেরেই পুলিশের উপরে আক্রমণ হয়েছে।