ঢেলে সাজা হচ্ছে মডেল ডেয়ারি ফার্ম

বিশ্বভারতীর ইতিহাস বলছে, আশ্রমের ছেলেমেয়েরা যাতে পোষা গরুর দুধ, ডিম প্রভৃতি খেতে পারে ও আশপাশের এলাকার মানুষজন যাতে স্বনির্ভর হতে পারে এই লক্ষ্যে ১৯০৬ সালে প্রথম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে একটি খামার তৈরি করেন।

Advertisement

বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৭
Share:

উদ্যোগ: শ্রীনিকেতনের পল্লিশিক্ষা ভবনে। নিজস্ব চিত্র

কৃষিকাজকে সমৃদ্ধ করতে ও আবাসিক খুদে পড়ুয়াদের দুধ সরবরাহের লক্ষ্যে উদ্যোগী হল বিশ্বভারতী। শ্রীনিকেতনে পল্লিশিক্ষা ভবনের অন্তর্গত ‘মডেল ডেয়ারি ফার্ম’টি ঢেলে সাজা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১০টি গরু কেনা হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ২০০টি গরু কিনতে চলেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই গরুগুলি থেকে উৎপাদিত দুধ পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের আবাসিক খুদে পড়ুয়াদের খাওয়ানো হবে। এ ছাড়া, শ্রীনিকেতনের অন্তর্গত গ্রামগুলির চাষিদের কৃষিকাজ সমৃদ্ধ করতে হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Advertisement

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্ত বলেন, “গুরুদেবের স্বপ্ন ছিল কৃষিকাজ ও গ্রাম উন্নয়ন। সেই লক্ষ্যে এই শ্রীনিকেতন নির্মাণ। আমরা ফের এই শ্রীনিকেতনের ফার্মটিকে মডেল ফার্ম আকারে ঢেলে সাজতে উদ্যোগী হয়েছি। গো-পালন ছাড়াও, হাঁস-পোল্ট্রি পালন করা হবে। এতে পড়ুয়াদেরও অনেক সুবিধা হবে।”

বিশ্বভারতীর ইতিহাস বলছে, আশ্রমের ছেলেমেয়েরা যাতে পোষা গরুর দুধ, ডিম প্রভৃতি খেতে পারে ও আশপাশের এলাকার মানুষজন যাতে স্বনির্ভর হতে পারে এই লক্ষ্যে ১৯০৬ সালে প্রথম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে একটি খামার তৈরি করেন। পরে শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার পর ১৯২১ সালে এই খামারটি শ্রীনিকেতনে স্থানান্তরিত করা হয়। এই খামারে পোষা গরুর দুধ খেত আবাসিক পড়ুয়ারা। ১৯৯০ সালের পর থেকে এই খামারটি আর্থিক বরাদ্দ ও লোকবলের অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল।

Advertisement

প্রাণী সম্পদ বিভাগের পড়ুয়াদের পড়াশোনার জন্য মাত্র তিনটি গরু ছিল খামারে। প্রায় ২৬ বছর পর এই ফার্মটিকে ‘মডেল ডেয়ারি ফার্ম’ হিসাবে গড়ে তুলতে আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০টি গরু কেনা হয়। জানা গিয়েছে, এই ফার্মের আরও উন্নয়নের জন্য আনুমানিক
দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ২০০টি গরু কেনা হবে। এখান থেকেই পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের আবাসিক পড়ুয়ারা দুধ খেতে পাবে। এ ছাড়া, শ্রীনিকেতনের সঙ্গে
যুক্ত আশপাশের গ্রামের কৃষকেরাও এই গরুগুলি পালনের মধ্য দিয়ে হাতেকলমে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পাবেন।

পল্লিশিক্ষা ভবনের অন্তর্গত প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সরোজকুমার পাইন বলেন, “এই ফার্মটি দেখভাল ও পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে এত কাল প্রায় অচল হয়েছিল। এ বার নতুন করে এটির উন্নয়ন নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এই ফার্মটিকে ঢেলে সাজলে পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন। আশপাশের গ্রামগুলির মানুষজনও এই সুফল পাবেন। গুরুদেবেরও তো এটাই লক্ষ্য ছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন