না থাকার দীর্ঘ তালিকা নিয়ে শতবর্ষের মুখে

রঙের পোঁচ পড়ায় বাইরে থেকে দেখলে ধোপদুরস্ত লাগে। কিন্তু স্কুলের ভিতরের পরিস্থিতি বেহাল বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ। ক্লাসঘর চারটি। পড়াশোনা হয় দু’টিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩২
Share:

পুরুলিয়ার জয়পুরের মুকুন্দপুর প্রাথমিক স্কুল। নিজস্ব চিত্র

একশো ছুঁতে আর বছর দু’য়েক বাকি। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পুরুলিয়ার জয়পুরের মুকুন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের ওই ঐতিহ্যটুকুই সম্বল। ক্লাসঘর, শিক্ষক, জল— কিছুই পর্যাপ্ত নেই।

Advertisement

রঙের পোঁচ পড়ায় বাইরে থেকে দেখলে ধোপদুরস্ত লাগে। কিন্তু স্কুলের ভিতরের পরিস্থিতি বেহাল বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ। ক্লাসঘর চারটি। পড়াশোনা হয় দু’টিতে। অন্য দু’টি ঘরে প্রায়শই চাঙড় খসে পড়ে। ভরা বর্ষায় থইথই করে জল। মুকুন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুভাষচন্দ্র মাহাতো বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষকে জানানো সত্ত্বেও নতুন ক্লাসঘর নির্মাণে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ এ দিকে, ভাঙাচোরা দশার কথা জানার পরে পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ওই ক্লাসঘর দু’টিতে না পড়াতে বলেছে, দাবি করেছেন সুভাষবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কোথায় পড়াব, তা নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। সমস্যায় পড়েছি আমরা’। দুটি ক্লাসরুমে সব ছেলেমেয়েকে বসাতেও পারি না।’’

এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সূর্য বাউড়ি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলটি ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত। সামনেই শতবর্ষ। স্কুলের ভগ্নদশা দেখে খারাপ লাগে।’’ ব্লক প্রশাসন দু’টি শৌচাগার নির্মাণ করে দিয়েছে। পাঁচিল হয়েছে। কিন্তু স্কুল সূত্রে জানা যাচ্ছে, মিড-ডে মিলের জন্য বানানো ছাউনি দেওয়া খাওয়ার জায়গায় বসে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করতে হয়। প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যাও কম বলে দাবি এলাকার বাসিন্দা আলোক হাজরা, সুকুমার হাজরাদের। স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৬৮। স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দু’জন। এক জন পার্শ্বশিক্ষক। আলোকবাবুরা বলেন, ‘‘এলাকার অন্য যে সব স্কুলে ছাত্রছাত্রী কম, সেখান থেকে ডেপুটেশনে শিক্ষক আনা হলে আমাদের ছেলেমেয়েগুলোর উপকার হয়।’’

Advertisement

অভিভাবক সদারঞ্জন পরামানিক জানাচ্ছেন, পানীয় জলের সঙ্কটও রয়েছে মুকুন্দপুর স্কুলে। পঞ্চায়েত অফিসের নলকূপ থেকে জল এনে মিড-ডে মিল রান্না করতে হয়। স্কুল ক্যাম্পাসে দু’টি নলকূপ খোঁড়া হয়েছিল। কোনওটিতেই জল ওঠে না। সাব-মার্সিবল পাম্প লাগানো হলেও সেটি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে অনেক দিন। জয়পুর নতুন চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অর্পণ গোস্বামী বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি। আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি।’’ তিনি জানান, পানীয় জল সমস্যার বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। বাকি সমস্যাগুলি নিয়ে যথাস্থানে দরবার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন