প্রধানমন্ত্রীর অটোগ্রাফ হাতে অনিতা ও রীতা (বাঁ দিক থেকে)। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রীকে চোখের দেখা দেখতে সভায় গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। আর সেই দুর্ঘটনাই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এল একেবারে হাতের নাগালে। এখন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের কলেজ ছাত্রীটির ছবি। বাড়িতে আসছে বিয়ের প্রস্তাবও।
গত ১৬ জুলাই মেদিনীপুরের কলেজ গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা ছিল। পরিবারের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন রানিবাঁধ ব্লকের তালগড়া গ্রামের রীতা মুদি। রীতা বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সঙ্গে ছিলেন সারদামণি গার্লস কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া বোন অনিতা, মা সন্ধ্যা আর পিসি দুঃখীরানি। হঠাৎ ভেঙে পড়ে প্যান্ডেল। হুড়োহুড়িতে সন্ধ্যা এবং দুঃখীরানি মাটিতে পড়ে যান। তাঁদের আগলে শুয়ে পড়েন রীতা আর অনিতা। জখম হন দুই বোনই। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে।
হাসপাতালের শয্যায় অনিতা প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে। মুখে অক্সিজেনের নল। রীতা অন্য একটি শয্যায়। মাথার কাছে বসে মা। তিনি বলেন, ‘‘তখনও আতঙ্কের রেশ কাটেনি। হঠাৎ দেখি চোখের সামনে খোদ মোদী।’’ রীতা বলেন, ‘‘আমার তখন মুখে কথা সরছে না। প্রধানমন্ত্রী হিন্দিতে জানতে চাইলেন, কেমন আছি?’’ রীতা জানিয়েছিলেন, ভাল আছেন।
তাঁকে মনের জোর রাখতে বলে অনিতার দিকে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, এমন সময়ে রীতা অটোগ্রাফের আব্দার করে বসেন। রীতা জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রথমে তাঁর কথা বুঝতেই পারেননি। পরে অবাক হয়ে যান। অটোগ্রাফ তো মেলেই, রীতার মাথায় হাত রেখে তিনি বলেন, ‘‘তুম বহৎ হিম্মতওয়ালি হো বেটা।’’ অনিতার কাছে গিয়েও কুশল জিজ্ঞাসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে মুখে অক্সিজেনের নল থাকায় কিছু বলতে পারেননি তিনি।
ওই ঘটনার পরে বদলে গিয়েছে দুই বোনের জীবন। পড়শিরা চলে আসছেন প্রধামন্ত্রীর অটোগ্রাফ দেখতে। রীতার বাবা সুভাষচন্দ্র মুদি কয়েক বিঘা জমিতে চাষ করে সংসার চালান। রীতার এক দাদাও রয়েছেন। অসীম। স্থায়ী চাকরির খোঁজ করছেন। সুভাষ বলেন, ‘‘খবরে আসার পরে জামশেদপুর আর খাতড়া থেকে ফোনে সম্বন্ধও এসেছে। তবে এখনই আমরা মেয়েদের বিয়ে দিতে চাই না।’’ একই কথা রীতা আর অনিতারও। দুই বোন বলেন, ‘‘আমরা পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।’’